Saturday 11 July 2015

গোলাম আজমের নাগরিকত্বের মামলা নিয়ে জামাতী মিথ্যাচারের আইনী উত্তর

ফেসবুক, ব্লগ, কিংবা বিভিন্ন টিভি টকশোতে একটি অদ্ভুত প্রোপাগান্ডা ইদানীং জামাতী ইসলামী নেতা, কর্মী ও ব্লগারদের মাধ্যমে খুব বেশী মাত্রায় প্রকাশিত হচ্ছে। সেটি হচ্ছে, যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে আটক জামায়াতে ইসলামীর প্রাক্তন আমীর ও বিশিষ্ট রাজাকার গোলাম আজমের ব্যাপারে নাকি বাংলাদেশের হাইকোর্ট ১৯৯৩ সালেই বলে দিয়েছে যে গোলাম আজম  একাত্তরে কোনো স্বাধীনতা বিরোধী কর্মকান্ডে যুক্ত ছিলো না এবং এর কোনো প্রমাণই নাকি হাইকোর্ট পায় নি। হাইকোর্টকে সংযুক্ত করে উপরের কথাগুলো মূলত জামাতের এখন একটি বড় অস্ত্র হিসেবে বিভিন্ন ব্লগ, ফেসবুক, জামাতের পত্রিকা। ইউটিউব, টুইটার এবং আরো নানান ধরনের প্রচার মাধ্যমে ব্যাপক আকারে প্রকাশিত হচ্ছে। এই প্রোপাগান্ডাটি এক দিক থেকে আতংকের, অন্য দিক থেকে বিষ্ময়ের আর বিরক্তির। 

আতংকের এই কারনে যে, একটি মিথ্যে ঘটনা খুবই চমৎকার করে সাজিয়ে, গুছিয়ে মানুষের সামনে প্রকাশ করে যুদ্ধাপরাধের বিচারকালীন সময়ে সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করা এবং এই ব্যাপারে সরকার কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না দেখে। বিষ্ময়কর এই কারনে যে, এই প্রোপাগান্ডা চালানোর সময় জামাতের নেতা কর্মীরা কি একবারও ভেবে দেখেনি যে এই প্রোপাগান্ডাটি অচিরেই মানুষের সামনে ধরা খেয়ে যাবে এবং এই অতি চরম আকারের এই মিথ্যাচার জানতে পেরে সেই বিভ্রান্ত মানুষসহ কোটি জনতা তাদের ধিক্কার দিবে? আর বিরিক্তিকর হচ্ছে এই কারনে যে, কয়দিন পর পর জামাতের নেতা-কর্মী ও সমর্থকরা যতসব হাস্যকর প্রোপাগান্ডা বাজারে ছাড়ে আর তারা এই বিশ্বাস নিয়ে বসে থাকে যে, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বুঝি এরি মধ্যে দিয়ে বন্ধ হয়ে গেলো, এর এইসব হাস্যকর প্রোপাগান্ডা দেখে আমার মত তৃতীয় শ্রেণীর একজন আইনের ছাত্রও লজ্জায় মুখ লুকায় আর স্বাভাবিক ভাবেই আইনের এই পরিমান ভুল ব্যখ্যা দেখে বিরক্ত হয়।

Thursday 9 July 2015

প্রাণ RFL গ্রুপের প্রধান আমজাদ খান কি যুদ্ধাপরাধী ছিলো?

যুদ্ধাপরাধী হিসেবে অভিযোগ ওঠা প্রাণের প্রধান আমজাদ
এই লেখাটি সদ্য প্রয়াত ব্যাবসায়ী, প্রাণ আর এফ এল গ্রুপের প্রধান মেজর জেনারেল (অবঃ) আমজাদ খান চৌধুরীকে নিয়ে 

আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে এই পর্যন্ত যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উত্থাপিত হয়েছে তাদের কারোর বিরুদ্ধেই যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ আনা হয়নি। বলে রাখা ভালো যে আন্তর্জাতিক অপরাধ আইনের বিশাল প্রেক্ষাপটে যুদ্ধাপরাধ অনেকগুলো অপরাধের মধ্যে একটি অপরাধ মাত্র। 

এই আন্তর্জাতিক অপরাধ আইনের মধ্যে সূচিত আরো যেসব অপরাধ রয়েছে যেমন মানবতা বিরোধী অপরাধ, শান্তির বিরুদ্ধে অপরাধ, গণহত্যা ইত্যাদি নানা অপরাধেই (যার যার ক্ষেত্রে যেই যেই অপরাধের চার্জ আনা যথোপযুক্ত হয়েছে সে বিবেচনায়) গোলাম আজম, কামারুজ্জামান, কাদের মোল্লা, সাঈদী, সাকা সহ সকল ব্যাক্তিকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।

Thursday 2 July 2015

সাক্ষী সুখরঞ্জন বালি কি তবে জামাতের বলি হলেন?

আন্তর্জাতিক অপরাধ আইনের অধীনে বিভিন্ন ধরনের ঘৃণ্য কর্মকান্ডের দায়ে আটক দেলোয়ার হোসেন সাঈদীর পক্ষে আসা সাফাই সাক্ষী সুখরঞ্জন বালি গত ৫ ই নভেমবর ২০১২ তে অপহৃত হয়েছে বলে এক ধরনের কথা উঠেছে চারিদিকেই। হিউম্যান রাইটস ওয়াচ সহ নানান ইংরেজী ব্লগে জামাতের লবিইস্টরা বলে বেড়াচ্ছে যে সুখরঞ্জন বালিকে নাকি ট্রাইবুনাল বিল্ডিং এর সামনে থেকে অপহরণ করে নিয়েছে সাদা পোশাকের প্রায় ১৫ জনের মত আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। আর এদিকে ডিফেন্স এই ব্যাপারটিতে প্রসিকিউশনকেও যখন জরাতে চাইলো তখন প্রসিকিউশন এই অভিযোগের তীব্র প্রতিবাদ করে এবং সেক্ষেত্রে সব কিছু দেখে, শুনে প্রসিকিউশনের বক্তব্য আমার কাছে যৌক্তিক বলেই মনে হয়েছে । এই সুখরঞ্জন বালির অপহরণের ধুয়ো তুলে হঠাৎ করেই এই ট্রাইবুনালের বিরোধী সকল শক্তিরা একে একে মাথা চাড়া দিয়ে উঠছে। তারা তাদের পুরোনো সেই সুর “ট্রাইবুনাল অভিযুক্তদের দমিয়ে রাখছে” এই প্রোপাগান্ডাটি বাঁচিয়ে রেখেছে নতুন একটা ঘটনার মাধ্যমে। একজন অবজার্ভার হিসেবে আমি পুরো ব্যাপারটিকে একটি নিরপেক্ষ দৃষ্টি থেকেই দেখবার চেষ্টা করেছি এবং কিছু সিদ্ধান্তে এসেছি।

আসুন একে একে পুরো ব্যাপারটি জানি। প্রথমেই জেনে নেই সুখরঞ্জন বালিকে নিয়ে কি বলছে অভিযুক্ত সাঈদীর আইনজীবিরাঃ 

গত মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে সাঈদীর আইনজীবী মিজানুল ইসলাম বলেন, 'সুখরঞ্জন বালি আমার সঙ্গে গাড়িতে করে আসছিলেন। সে সময় প্রায় ১৫ জন পুলিশের সামনে থেকে সাদা পোশাকধারী লোকেরা তাঁকে আমার গাড়ি থেকে টেনেহিঁচড়ে নামিয়ে নিয়ে গেছে"

Wednesday 1 July 2015

হুমায়ুনের হাতে নিহত একজন


এক
সব রাতেই আমার নানান ধরনের স্বপ্ন দেখা হয়। এইসব স্বপ্নের কোনো কুল কিনারা নেই। কখনো তাহের ভাইয়ের দোকানের চা খাচ্ছি অনেক নাম না জানা মানুষের সাথে বসে, তারপর মুহুর্তেই লন্ডনের ট্রাফেলগার স্কোয়ারের অসংখ্য মানুষের সাথে দাঁড়িয়ে রয়েছি একা একা কিংবা পরীক্ষার হলে একটি পাটিগনিত কোনোভাবেই মিলাতে পারছিনা, কামরুল স্যার রক্তচক্ষু করে তাকিয়ে আছেন আমার দিকে। আমি প্রায় সময়ই আমার বন্ধু তাওহীদকে দেখি, যে বন্ধুটি ভালোবাসায় ব্যার্থ হয়ে স্বেচ্ছায় চলে গিয়েছিলো না ফেরার দেশে এক ঝাঁ ঝাঁ দুপুরে। কোনো এক অজানা কারনে আমি তাওহীদের সাথে অর্ণবকেও দেখি। অর্নব ঠিক আমার পরিচিত কেউ নয়। তাকে আমি চিনিনা। পত্রিকায় পড়েছিলাম আজ থেকে প্রায় ১২ বছর আগে। কোন শহর তা আর মনে নেই, কিন্তু অর্ণব নামে এক ৪ বছরের শিশুকে খুন করে ফেলে রেখে গিয়েছিলো খুনীরা। তাঁর ছবিটি প্রকাশিত হয়েছিলো দৈনিক পত্রিকাগুলোতে। কি এক অদ্ভুত কারনে এত অসংখ্য ঘটনা, দূর্ঘটনা, স্মৃতি, ভালোবাসা, আনন্দের ফাঁক গলিয়েও এই ১২ বছরে আমি অর্ণবকে ভুলে যাই নি।