Saturday 19 December 2015

অস্ট্রেলিয়া থেকে ব্যারিস্টার ও সলিসিটর হতে ইচ্ছুক যারা

ভূমিকাঃ

আমার পরিচিত কিংবা অপরিচিত বিভিন্ন রেফারেন্সের সূত্র ধরে অনেকেই প্রায়শঃ জানতে চান যে তিনি অস্ট্রেলিয়া থেকে কিভাবে ব্যারিস্টার ও সলিসিটর হতে পারবেন। এরকম অনেক কৌতূহলের প্রেক্ষিতেই মনে হোলো এই বিষয়ক একটি সাধারণ ধারনা যদি আমি পাঠকদের দিতে পারি তবে যারা অস্ট্রেলিয়া থেকে ব্যারিস্টার ও সলিসিটর হতে চান তাঁদের জন্য খুব সুবিধা হবে।

আগেই বলে নেয়া ভালো যে এই লেখাটি একেবারে খুব বিস্তারিত আলোচিত হচ্ছে না। অস্ট্রেলিয়া থেকে ব্যারিস্টার এবং সলিসিটর হওয়া খুব দীর্ঘ একটি প্রক্রিয়া। প্রচুর বিধি রয়েছে, নিয়ম রয়েছে, ফরমালিটিস রয়েছে। সবচাইতে বড় কথা হচ্ছে এই কোর্স করতে হলে আপনাকে প্রচন্ড ধৈর্য্যশীল এবং পরিশ্রমী হতে হবে। পড়ালেখাতে সামান্য যদি গাফিলতি করেছেন তাহলে সেটির দায় পুরো কোর্স জুড়ে আপনাকেই বহন করতে হবে এবং এমনকি এই কোর্স থেকে আপনি ছিটকেও পড়তে পারেন।

অস্ট্রেলিয়ায় আইন প্র্যাক্টিস বেশ প্রতিযোগিতামূলক। প্রতিবছর-ই অনেক নবীন আইনজীবি কোর্স শেষ করে বের হচ্ছেন কিন্তু বাস্তব জীবনে কে কতটুকু ভালো করবেন সেটি আসলে নির্ভর করে ব্যক্তির আইন বুঝবার ক্ষমতা, কতটুকু পরিশ্রম করতে পারছেন, কোন সিনিয়রের সাথে সহকারী হিসেবে কাজ করছেন, কমিউনিকেশন দক্ষতা কেমন, ইংরেজীতে বলতে পারবার দক্ষতা কেমন কিংবা আইনের সুনির্দিষ্ট কোন অংশে কাজ করছেন বা করবেন এইরকম নানাবিধ সিদ্ধান্তের উপর।

Saturday 5 December 2015

এমন তো কথা ছিলো না...

রিচার্ড আর ক্রিস্টিনা সারা রাস্তা জুড়েই কথা বলছিলো স্কেট বোর্ডিং নিয়ে, ক্যানাল বোটিং নিয়ে, কবে কে কখন বাঙ্গি জাম্প দিয়েছে, স্কাই ডাইভ করেছে সেসব নিয়ে। আমিও সে আলোচনায় মাঝে মধ্যে ঢুকি, টুকটাক অন্য কিছু নিয়েও আমাদের কথা হয়, তারপরেও আমি কেন জানি আনন্দ পাইনা।আমি ওদের পেছনে পেছনে হাঁটি আর ওরা সামনে দু’জন কথা বলে জীবনের অসংখ্য আওনন্দের ঘটনা নিয়ে। কোন দেশের কোন খাওয়া ভালো, কোন রাস্তা ভালো, কোন শহর ভালো...আর কত কি...

কি এক শূন্য চাহনি নিয়ে বেইজিং এর ব্যস্ত রাস্তার দিকে তাকিয়ে থাকি। এত ঘন বসতিপূর্ণ একটা দেশ অথচ কি চমৎকার করে সাজিয়ে রেখেছে। চায়না ছাড়া এই পৃথিবী মোটামুটি অচল আর আমি সেই চায়নাতে দাঁড়িয়ে আছি ভাবতেই আবার দ্রুত চারিদিকে তাকিয়ে নেই এক নজর। আর ঘন্টা দশেক পর এই শহর ছেড়ে পাড়ি দেব লন্ডনে, তাই শুধু যত দ্রুত দেখে নেয়া যায়...

Friday 4 December 2015

আন্তর্জাতিক অপরাধ আইনের থিওরেটিকাল কাঠামো ও বাংলাদেশের ট্রাইবুনালঃ আইনী পর্যবেক্ষণ

২০১০ সালের ২৫ শে মার্চ তারিখে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালের সূচনা হয়। মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানী ও তাদের দোসরদের মাধ্যমে সংগঠিত নানাবিধ আন্তর্জাতিক অপরাধের সুষ্ঠু বিচারের লক্ষ্যেই এই ট্রাইবুনাল গঠিত হয়। ১৯৭২ সালের দালাল আইনের মাধ্যমে শুরু হওয়া বিচার যদিও সে সময়ে আশার আলো দেখিয়েছিলো কিন্তু ১৯৭৫ পরবর্তী সময়ে সেই বিচার বন্ধ করবার মধ্য দিয়ে এই বাংলাদেশ বিচারহীনতার দীর্ঘ ৩৯ বছর বিচারহীনতার এক কালো অধ্যায়ের মধ্য দিয়ে হেঁটে গেছে। এর ফলে বিচার প্রার্থী আর অপরাধীদের একই দেশে সহঅবস্থান নিশ্চিত হয়েছিলো এবং রাষ্ট্র তার জন্মের সূচনালগ্নেই বিচারপ্রার্থীদের উপর অন্যায়ের সূচনা করেছিলো এবং সেটি প্রকারন্তরে রাষ্ট্রের উপর অবিশ্বাস জন্মাবার সূচনা করে। কিন্তু ২০১০ সালে শুরু হওয়া আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল এই জন্মানো হতাশার মধ্যে এই বাংলাদেশ রাষ্ট্রকে পুনঃর্জন্ম দান করেছে। বিচারহীনতার লজ্জার একটা সংস্কৃতি থেকে বাংলাদেশ মুক্তি পথে ছুটে চলেছে এর চাইতে এত বড় আনন্দের আর কিছু নেই সম্ভবত।

পৃথিবীর ইতিহাসে বাংলাদেশের এই আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের বিচার করবার পুরো প্রক্রিয়া, রাষ্ট্রের সদিচ্ছা, প্রসিজিওর, বিচারহীনতার সংস্কৃতিকে নির্মূল করবার পদক্ষেপ এসব সব কিছু মিলিয়েই এই ট্রাইবুনাল, এই আদালত, এই আইন স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। আন্তর্জাতিক অপরাধ আইন নিয়ে যারা পড়েন, গবেষনা করেন, আগ্রহী তাঁদের সকলের জন্যই বাংলাদেশের এই আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের বিচার সব সময়ের জন্য ন্যায়বিচারের প্রশ্নে অনুসরণীয় হয়ে থাকবে।

Wednesday 25 November 2015

রাজাকারদের প্রতি দরদ কেনো হলো বাংলাদেশে?

মহান মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ের শিউরে উঠা নৃশংশতা আর অভিজ্ঞতার পরেও সাকা আর মুজাহিদের মত দুইজন জলজ্যান্ত একাত্তরের ঘাতকদের পক্ষে এই বাংলাদেশে একজন হলেও যদি সহমর্মিতা দেখায় তবে ভাববার প্রয়োজন রয়েছে যে কেন সেটি হচ্ছে। সাময়িকভাবে আপনার হয়ত ক্ষোভ হতে পারে কিংবা ক্রোধে ক্রোধান্বিত হয়ে সেটি প্রকাশও করতে পারেন। সেটি করাই স্বাভাবিক কিন্তু কেন এটি হচ্ছে বা হোলো এগুলো নিয়ে কিছুটা হলেও গভীর ভাবনার প্রয়োজন রয়েছে। আমি হয়ত সেই গভীর ভাবনা কিংবা দূর্দান্ত এনালিটিকাল একটা লেখা লিখবার জন্য যোগ্য নই বা সে ক্ষমতাও রাখিনা কিন্তু সামান্য ভাবনার খোরাক আমি আমার পাঠক/পাঠিকাদের জন্য হয়ত যোগাতে পারি। এই ভাবনার খোরাক নিয়েই হয়ত তাঁরা আরো সুগভীরভাবে ভেবে দেখবেন পুরো ব্যাপারটি।
আমি আমার পূর্বের অনেক লেখাতেই ১৯৭২ সালে যখন সর্ব প্রথম দালাল আইনে রাজাকার-আলবদরদের বিচার হয়েছিলো সে বিচারের নানা প্রাসঙ্গিক কথন আপনাদের সামনে হাজির করেছিলাম। সে সময়কার বিচারটা ছিলো এমন একটা সময় যখন মুক্তিযুদ্ধের দগদগে স্মৃতি আর ভয়াবহতার কথা শরীরে আরো তাজা হয়ে লেগে ছিলো। তার মানে এই নয় যে এখন আর সেটি তাজা নয়, কিন্তু সময়ের ক্রম বিবেচনা করলেও সে সময়কার স্মৃতি অনেক বেশী কাছাকাছি ও নৃশংসতাকে আরো বেশী স্পস্ট করে তোলে।
মুক্তিযুদ্ধের ঠিক পর পর এই দালাল আইনে বিচারের সময় জামাতী ইসলামী, নেজামী পার্টি, মুসলিম লীগ সহ যে যে দলের মধ্য থেকে রাজাকার, আলবদর তথা ঘাতকেরা মূলত উঠে এসেছিলো সেসব দল কিংবা দলের সদস্যরা দৌড়ের উপর ছিলো। মূলত সাড়ে সাত কোটি বাংলাদেশীদের মধ্যে অধিকাংশ বাংলাদেশী এই বিচারের পক্ষে ছিলো এবং এটাই সে সময় স্বাভাবিক ছিলো। স্বাভাবিকের থেকে সবচাইতে বড় ব্যাপার ছিলো যে কোনো অপরাধ রাষ্ট্রের ভূ-খন্ডে হলে এটা শেষ পর্যন্ত রাষ্ট্রের উপরেই গিয়ে বর্তায় সে অপরাধের ন্যায্য বিচার করবার জন্য।

Monday 23 November 2015

দায়টা শুধু আওয়ামীলীগের উপরেই কেন বর্তালেন আপনারা?

এই বিচারের বিরুদ্ধে যে প্রোপাগান্ডা সবার আগে আমাদের শুনতে হয় সেটি হচ্ছে, এই বিচার আওয়ামীলীগ সরকার তার রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করবার জন্যই করেছে। শুনতে শুনতে কান পঁচে গিয়েছে। কিন্তু যখনই আমি এই অসভ্য প্রচারণার বিরুদ্ধে যৌক্তিক কিছু প্রশ্ন করি তখন শুনতে হয় “শালা আওয়ামীলীগের দালাল” বাক্যটি।
ব্যাক্তিগত ট্যাগিং-এ আমি কখনো আওয়াজ দেই না। ট্যাগিং হচ্ছে আক্রমণের অস্ত্র। যে যুদ্ধে আছি সেখানে এইসব অস্ত্রের আঘাত সইতে হবে এটা জেনে আর বুঝেই মাঠে নেমেছি। সুতরাং ট্যাগবাজেরা ব্যার্থ হবেই, এতে আমার সন্দেহ নেই। কিন্তু যে বিষয় নিয়ে আমি এই লেখাটি শুরু করেছি সেটিতেই বরং ফিরে যাই। এই বিচারটা যখন শুরু হোলো তখন এই বিচারবিরোধীরা আর কিছু বিভ্রান্ত মানুষেরা ঠোঁট উল্টে বলা শুরু করলো আরেহ... আওয়ামীলীগ ১৯৯৬ সালে জামাতের সাথে জোট করে এখন আবার ২০১০ সালের বিচার করে, ভাওতাবাজির আর যায়গা পায়না। এই সুনির্দিষ্ট অভিযোগটি দেবার আগে আমাদের কিছু কথা জেনে রাখা খুব বেশী মাত্রায় প্রয়োজন।

Thursday 29 October 2015

সাকা'র পাকি বন্ধুদের এফিডেভিটঃ একটি ভয়াবহ অসংগতির প্রমাণ

এরই মধ্যে যারা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীকে নিয়ে আমার নিজের ব্লগে কিংবা ফেসবুকে নানাবিধ লেখা দেখেছেন তারা হয়ত জানেন যে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর মামলাটি নিয়ে আমি নানাবিধ আঙ্গিকে লেখা লিখেছি এবং আপনাদের নানাবিধ তথ্য দেবার চেষ্টা করেছি। কিন্তু আজকে আমার চোখে এক মারাত্নক ব্যাপার ধরা পড়লো। এই তথ্যটি এসেছে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর পক্ষে সাফাই সাক্ষী দিতে চাওয়া ৫ জন পাকিস্তানীর মধ্যে দুইজনের এফিডেভিট আরো একবার ভালো করে পড়বার পর।


এই দুইজন ব্যাক্তির নাম হচ্ছে ইসহাক খান খাকওয়ানি এবং রিয়াজ আহমেদ নুন।

এর আগে আপনাদের আমি এই প্রত্যেক পাকিস্তানীদের এফিডেভিট উল্লেখ করে কার এফিডেভিটে কি কি দূর্বলতা রয়েছে সেটির একটা সিনোপসিস টেনেছিলাম আমার আগের লেখায়। কিন্তু আজকে পুনরায় সেসব এফিডেভিট আরো সুক্ষ্ণ ভাবে পড়তে গিয়ে হঠাৎ করে এমন একটি বিষয় নজরে আসলো যেটি আগে চোখে পড়েনি।

Saturday 17 October 2015

সাকার পক্ষে ৭ পাকিস্তানীর সাক্ষীঃ যে কারনে গ্রহনযোগ্য হবে না

সাকার পক্ষে নিয়োজিত লবিস্ট ডক্টর কামাল হোসেনের জামাতা ডেভিড বার্গম্যান আদা জল খেয়ে নেমেছেন এবং প্রশ্ন করছেন যে একাত্তরের ঘাতক সাকার চৌধুরীর পক্ষে পাকিস্তান থেকে দেয়া ৭ জন ব্যাক্তির এর এফিডেভিট কেন আমলে নেয়া হয়নি। এই প্রসঙ্গে প্রশ্নটা যেভাবে উত্থাপিত হয় সেটি এরকম-



আদালতে সাক্ষী উপস্থাপনের সুযোগ না পাওয়ায় সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর আইনজীবীরা সাতজন সাক্ষীর এফিডেবিট আদালতে উপস্থাপন করেছিলেন, যারা নিশ্চিত করেছেন যে যুদ্ধচলাকালীন সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী পাকিস্তানে অবস্থান করছিলেন। সেই এফিডেবিটগুলোকে ট্রাইবুনাল খারিজ করে দেয়নি, কিন্তু যথাযথভাবে উপস্থাপন করা হয়নি এই অযুহাতে সেগুলো আমলে নেয়নি। কেন?

আমি আমার এর আগের অনেক লেখার মধ্যে আগেই বলেছি, আইনে যে পদ্ধতিগত প্রক্রিয়া বলা রয়েছে সেভাবে সাক্ষ্য প্রমাণ উপস্থিত করতে হবে, মানে আইনের ৯(৫) ধারা মোতাবেক। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালস আইনের ৯ এর উপধারা ৫ এ বলা রয়েছে-


(5) A list of witnesses for the defence, if any, along with the documents or copies thereof, which the defence intends to rely upon, shall be furnished to the Tribunal and the prosecution at the time of the commencement of the trial.

Thursday 10 September 2015

ডাঃ পিনাকী ভট্টাচার্যের আহবানের প্রেক্ষিতে আমার জবাব

কেন এই লেখা লিখছিঃ

সাম্প্রতিক সময়ে ফেসবুক কেন্দ্রিক একটি আলোচনার সূত্রপাত হয়েছে। ডাঃ পিনাকী ভট্টাচার্য্য (পিনাকীদা) একটি ফেসবুক স্ট্যাটাস যেটি তিনি প্রকাশ করেন ৩১ শে অগাস্ট ২০১৫। সেই স্ট্যাটাসে পিনাকীদা ডক্টর মুহম্মদ জাফর ইকবাল (জাফর স্যার) এর ২০১৪ সালের মার্চ মাসে লিখিত “স্বাধীনতার ৪৪ বছর” শীর্ষক একটি কলামের কয়েকটি লাইনকে উদ্ধৃত করে সেটি ভিত্তি করে প্রশ্ন তুলেছেন এবং লিখেছেন-

“কিন্তু গোল্ডেন কোশ্চেন হচ্ছে, মুক্তিযুদ্ধের ভিত্তিটা কী? সেটাও তিনি বলেছেন "(অ) সাম্প্রদায়িক দেশ তৈরি করা। অসাম্প্রদায়িকতা মুক্তিযুদ্ধের ভিত্তি ছিল নাকি? কোথায় ছিল? নিশ্চয় কোন দফা, দাবী বা ঘোষণায় ছিল? সেটা কোথায়?আজকে মুক্তিযুদ্ধের চুয়াল্লিশ বছর পরে মুক্তিযুদ্ধের ভিত্তি একজন জাফর ইকবাল নতুন করে নির্মাণ করলে আমি সেটা মানতে বাধ্য কেন? আমি তো মানবো সেই ঘোষণাকে যা আমাদের প্রোক্লেমেশন অব ইন্ডিপেন্ডেন্সের মাধ্যমে ১০ই এপ্রিল মুজিবনগর সরকার ঘোষণা করেছিল, মুক্তিযুদ্ধের বৈধতা দাবী করা হয়েছিল সাম্য, মানবসত্তার মর্য্যাদা আর সামাজিক ন্যায়বিচারের বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গীকার করার মাধ্যমে। কে সেই ভিত্তি থেকে সরে এসেছে? জাফর ইকবাল কি মুজিবনগর সরকারের চাইতে বেশী মান্য? বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণে কি অসাম্প্রদায়িক দেশ গড়ার ঘোষণা ছিল? নাকি বাঙালি জাতির আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকারের দাবী ছিল; বাঙালি জাতির স্বাধীন রাষ্ট্রের দাবী ছিল? জাফর ইকবাল কোথায় পেলেন এই মুক্তিযুদ্ধের ভিত্তি? আমি কি বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের বক্তৃতা মানবো নাকি জাফর ইকবালের কথা মানবো?”

Monday 31 August 2015

জাফর ইকবাল স্যারের বিরুদ্ধে মাসুদ রানাদের এত ক্ষোভ কেন?

যুক্তরাজ্য প্রবাসী মাসুদ রানা পর পর দুইটি নোটে জাফর ইকবাল স্যারকে তীব্র ভাবে অনৈতিক আক্রমণ করেছেন। ব্যক্তিগত গরল, ঘৃণা উদগীরনের এটাই বোধকরি এই ধরনের মানুষের জন্য সহজ সময়। পাহাড়ের সামনে দাঁড়াবার যার সামান্যতম যোগ্যতা নেই সে-ই খুব সম্ভবত ফাঁক খোঁজে পাহাড়ের পাদদেশে ফুটো করে পাহাড়কে জয় করবার। কিন্তু পাহাড়ের পাদদেশে ফুটো করে নিজেকে আড়াল করা যায়,খানিকটা লুকোনো যায়, পাহাড় জয় করতে পারা যায়না।

এর মধ্যে বলে রাখা ভালো যে মাসুদ রানা এক সময় বাসদ (বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল) সমর্থন করতেন বলেই বাজারে চালু রয়েছে। যদিও আমি নিশ্চিত নই। যদি হয়ে থাকে তবে সেক্ষেত্রে বলতেই হয় লুপ্ত ও বিস্মৃত দলটির এক সময়কার কর্মী আজ জাফর ইকবাল স্যারের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছেন। মেটাফোরিক বর্ণনে বলা যায় যে, সাবেক সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী নেতা বর্তমানে সাম্রাজ্যবাদী দেশের নাগরিক। বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাস ঘাটলে দেখা আরামে আয়েশে থেকে নাদুশ নুদুশ হবার পর সাম্রাজ্যবাদ সাধারণত আরামবাদ হয়ে ওঠে। 

Saturday 15 August 2015

যে দেশে বিচারের বাণী নিভৃতে কাঁদে না

সংযোজনী তথ্যঃ এই লেখাটি প্রথম লিখেছিলাম আমার ব্লগে ২০০৯ সালের ২০ শে নভেম্বর। খুব সম্ভবত সেদিন আপীলেট ডিভিশন থেকে বঙ্গবন্ধু হত্যার রায় পাওয়া গিয়েছিলো বিচারের সর্বশেষ ধাপ হিসেবে।

আজকে খুব বেশী কথা বলতে ইচ্ছে হচ্ছে না। এমন আনন্দের দিনে খুব বেশী কিছু বলারও থাকে না। মাঝে মাঝে এরকম বাক রুদ্ধ হয়ে যেতেই হয়। পত্রিকায় পড়ছিলাম,ব্যারিস্টার তাপস কাঁদছেন। কারন আজ তার বাবার এবং মা হত্যার বিচার হয়েছে। এই অনুভূতিটুকু ব্যারিস্টার তাপসের মত করে না বুঝলেও কিছুটা তো অনুধাবন করতেই পারি। একজন আইনজীবি হিসেবে তিনি অবশ্যই স্বার্থক ও গর্বিত। মৃত বাবা-মা'র জন্য লড়ে আসামীদের শাস্তি দিতে পেরেছেন। এর চেয়ে আনন্দের দিন একজন আইঞ্জীবির আর কিই বা হতে পারে !

শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা, তদুপরি সমগ্র বাংগালী জাতির আজ খুশির দিন । গলায় কাঁটা বেঁধে থাকলে যেমন একধরনের প্রবল ব্যাথা বোধ হয় ঠিক তেমনি বংগবন্ধুর ও সেদিন নিহত হওয়া মানুষগুলোর বিচার এই বাংলাদেশে না হলে তা হতো সমগ্র বাঙ্গালী জাতিসত্বার জন্য এক প্রচন্ড ব্যাথাবোধ ও লজ্জার । আমি এখনো ঠিক ওই অর্থে খুশি নই । যদি বংগবন্ধু হত্যাকারীদের প্রতিটি পশুকে এক কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে একই সাথে ফায়ারিং স্কোয়াডে দাঁড় করানো যেতো, তবে তা হতো পরম আনন্দের ও আত্ম প্রসাদ লাভের একটি সুযোগ । যেখানে সামান্যও পাইনি এতকাল, সেখানে এই বিচার ও শাস্তি্‌, ওই না পাওয়ার বিচারে অনেক বেশী , তা বলাই বাহুল্য । সে চিন্তায় ও যুক্তিতে আমি আনন্দিত।

Saturday 11 July 2015

গোলাম আজমের নাগরিকত্বের মামলা নিয়ে জামাতী মিথ্যাচারের আইনী উত্তর

ফেসবুক, ব্লগ, কিংবা বিভিন্ন টিভি টকশোতে একটি অদ্ভুত প্রোপাগান্ডা ইদানীং জামাতী ইসলামী নেতা, কর্মী ও ব্লগারদের মাধ্যমে খুব বেশী মাত্রায় প্রকাশিত হচ্ছে। সেটি হচ্ছে, যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে আটক জামায়াতে ইসলামীর প্রাক্তন আমীর ও বিশিষ্ট রাজাকার গোলাম আজমের ব্যাপারে নাকি বাংলাদেশের হাইকোর্ট ১৯৯৩ সালেই বলে দিয়েছে যে গোলাম আজম  একাত্তরে কোনো স্বাধীনতা বিরোধী কর্মকান্ডে যুক্ত ছিলো না এবং এর কোনো প্রমাণই নাকি হাইকোর্ট পায় নি। হাইকোর্টকে সংযুক্ত করে উপরের কথাগুলো মূলত জামাতের এখন একটি বড় অস্ত্র হিসেবে বিভিন্ন ব্লগ, ফেসবুক, জামাতের পত্রিকা। ইউটিউব, টুইটার এবং আরো নানান ধরনের প্রচার মাধ্যমে ব্যাপক আকারে প্রকাশিত হচ্ছে। এই প্রোপাগান্ডাটি এক দিক থেকে আতংকের, অন্য দিক থেকে বিষ্ময়ের আর বিরক্তির। 

আতংকের এই কারনে যে, একটি মিথ্যে ঘটনা খুবই চমৎকার করে সাজিয়ে, গুছিয়ে মানুষের সামনে প্রকাশ করে যুদ্ধাপরাধের বিচারকালীন সময়ে সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করা এবং এই ব্যাপারে সরকার কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না দেখে। বিষ্ময়কর এই কারনে যে, এই প্রোপাগান্ডা চালানোর সময় জামাতের নেতা কর্মীরা কি একবারও ভেবে দেখেনি যে এই প্রোপাগান্ডাটি অচিরেই মানুষের সামনে ধরা খেয়ে যাবে এবং এই অতি চরম আকারের এই মিথ্যাচার জানতে পেরে সেই বিভ্রান্ত মানুষসহ কোটি জনতা তাদের ধিক্কার দিবে? আর বিরিক্তিকর হচ্ছে এই কারনে যে, কয়দিন পর পর জামাতের নেতা-কর্মী ও সমর্থকরা যতসব হাস্যকর প্রোপাগান্ডা বাজারে ছাড়ে আর তারা এই বিশ্বাস নিয়ে বসে থাকে যে, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বুঝি এরি মধ্যে দিয়ে বন্ধ হয়ে গেলো, এর এইসব হাস্যকর প্রোপাগান্ডা দেখে আমার মত তৃতীয় শ্রেণীর একজন আইনের ছাত্রও লজ্জায় মুখ লুকায় আর স্বাভাবিক ভাবেই আইনের এই পরিমান ভুল ব্যখ্যা দেখে বিরক্ত হয়।

Thursday 9 July 2015

প্রাণ RFL গ্রুপের প্রধান আমজাদ খান কি যুদ্ধাপরাধী ছিলো?

যুদ্ধাপরাধী হিসেবে অভিযোগ ওঠা প্রাণের প্রধান আমজাদ
এই লেখাটি সদ্য প্রয়াত ব্যাবসায়ী, প্রাণ আর এফ এল গ্রুপের প্রধান মেজর জেনারেল (অবঃ) আমজাদ খান চৌধুরীকে নিয়ে 

আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে এই পর্যন্ত যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উত্থাপিত হয়েছে তাদের কারোর বিরুদ্ধেই যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ আনা হয়নি। বলে রাখা ভালো যে আন্তর্জাতিক অপরাধ আইনের বিশাল প্রেক্ষাপটে যুদ্ধাপরাধ অনেকগুলো অপরাধের মধ্যে একটি অপরাধ মাত্র। 

এই আন্তর্জাতিক অপরাধ আইনের মধ্যে সূচিত আরো যেসব অপরাধ রয়েছে যেমন মানবতা বিরোধী অপরাধ, শান্তির বিরুদ্ধে অপরাধ, গণহত্যা ইত্যাদি নানা অপরাধেই (যার যার ক্ষেত্রে যেই যেই অপরাধের চার্জ আনা যথোপযুক্ত হয়েছে সে বিবেচনায়) গোলাম আজম, কামারুজ্জামান, কাদের মোল্লা, সাঈদী, সাকা সহ সকল ব্যাক্তিকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।

Thursday 2 July 2015

সাক্ষী সুখরঞ্জন বালি কি তবে জামাতের বলি হলেন?

আন্তর্জাতিক অপরাধ আইনের অধীনে বিভিন্ন ধরনের ঘৃণ্য কর্মকান্ডের দায়ে আটক দেলোয়ার হোসেন সাঈদীর পক্ষে আসা সাফাই সাক্ষী সুখরঞ্জন বালি গত ৫ ই নভেমবর ২০১২ তে অপহৃত হয়েছে বলে এক ধরনের কথা উঠেছে চারিদিকেই। হিউম্যান রাইটস ওয়াচ সহ নানান ইংরেজী ব্লগে জামাতের লবিইস্টরা বলে বেড়াচ্ছে যে সুখরঞ্জন বালিকে নাকি ট্রাইবুনাল বিল্ডিং এর সামনে থেকে অপহরণ করে নিয়েছে সাদা পোশাকের প্রায় ১৫ জনের মত আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। আর এদিকে ডিফেন্স এই ব্যাপারটিতে প্রসিকিউশনকেও যখন জরাতে চাইলো তখন প্রসিকিউশন এই অভিযোগের তীব্র প্রতিবাদ করে এবং সেক্ষেত্রে সব কিছু দেখে, শুনে প্রসিকিউশনের বক্তব্য আমার কাছে যৌক্তিক বলেই মনে হয়েছে । এই সুখরঞ্জন বালির অপহরণের ধুয়ো তুলে হঠাৎ করেই এই ট্রাইবুনালের বিরোধী সকল শক্তিরা একে একে মাথা চাড়া দিয়ে উঠছে। তারা তাদের পুরোনো সেই সুর “ট্রাইবুনাল অভিযুক্তদের দমিয়ে রাখছে” এই প্রোপাগান্ডাটি বাঁচিয়ে রেখেছে নতুন একটা ঘটনার মাধ্যমে। একজন অবজার্ভার হিসেবে আমি পুরো ব্যাপারটিকে একটি নিরপেক্ষ দৃষ্টি থেকেই দেখবার চেষ্টা করেছি এবং কিছু সিদ্ধান্তে এসেছি।

আসুন একে একে পুরো ব্যাপারটি জানি। প্রথমেই জেনে নেই সুখরঞ্জন বালিকে নিয়ে কি বলছে অভিযুক্ত সাঈদীর আইনজীবিরাঃ 

গত মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে সাঈদীর আইনজীবী মিজানুল ইসলাম বলেন, 'সুখরঞ্জন বালি আমার সঙ্গে গাড়িতে করে আসছিলেন। সে সময় প্রায় ১৫ জন পুলিশের সামনে থেকে সাদা পোশাকধারী লোকেরা তাঁকে আমার গাড়ি থেকে টেনেহিঁচড়ে নামিয়ে নিয়ে গেছে"

Wednesday 1 July 2015

হুমায়ুনের হাতে নিহত একজন


এক
সব রাতেই আমার নানান ধরনের স্বপ্ন দেখা হয়। এইসব স্বপ্নের কোনো কুল কিনারা নেই। কখনো তাহের ভাইয়ের দোকানের চা খাচ্ছি অনেক নাম না জানা মানুষের সাথে বসে, তারপর মুহুর্তেই লন্ডনের ট্রাফেলগার স্কোয়ারের অসংখ্য মানুষের সাথে দাঁড়িয়ে রয়েছি একা একা কিংবা পরীক্ষার হলে একটি পাটিগনিত কোনোভাবেই মিলাতে পারছিনা, কামরুল স্যার রক্তচক্ষু করে তাকিয়ে আছেন আমার দিকে। আমি প্রায় সময়ই আমার বন্ধু তাওহীদকে দেখি, যে বন্ধুটি ভালোবাসায় ব্যার্থ হয়ে স্বেচ্ছায় চলে গিয়েছিলো না ফেরার দেশে এক ঝাঁ ঝাঁ দুপুরে। কোনো এক অজানা কারনে আমি তাওহীদের সাথে অর্ণবকেও দেখি। অর্নব ঠিক আমার পরিচিত কেউ নয়। তাকে আমি চিনিনা। পত্রিকায় পড়েছিলাম আজ থেকে প্রায় ১২ বছর আগে। কোন শহর তা আর মনে নেই, কিন্তু অর্ণব নামে এক ৪ বছরের শিশুকে খুন করে ফেলে রেখে গিয়েছিলো খুনীরা। তাঁর ছবিটি প্রকাশিত হয়েছিলো দৈনিক পত্রিকাগুলোতে। কি এক অদ্ভুত কারনে এত অসংখ্য ঘটনা, দূর্ঘটনা, স্মৃতি, ভালোবাসা, আনন্দের ফাঁক গলিয়েও এই ১২ বছরে আমি অর্ণবকে ভুলে যাই নি।

Saturday 20 June 2015

বুদ্ধিজীবি হত্যাকারী প্রবাসী মইনুদ্দীন ও আশরাফুজ্জামানের মামলার রায়:একটি আইনী পর্যবেক্ষন


এই লেখাটা সোনেলা ব্লগে প্রকাশিত আমার প্রথম লেখা। ব্যাতিক্রম ছাড়াই লেখাটা আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল বাংলাদেশের উপর। স্পেসিফিক ভাবে বলতে গেলে এই লেখাটি মুক্তিযুদ্ধকালীন বুদ্ধিজীবি হত্যাকারী চৌধুরী মইনুদ্দিন ও আশরাফুজ্জামান খানের ব্যাপারে আদালতের দেয়া রায়ের একটি আইনী পর্যবেক্ষন। যদিও এখানে রায় ব্যাতীত সংশ্লিষ্ঠ অনেকগুলো ইস্যু আলোচিত হয়েছে। আমি লক্ষ্য করে দেখেছি বুদ্ধিজীবি হত্যাকান্ডের মূল হোতা চৌধুরী মইনুদ্দিন ও আশরাফুজ্জামান খানের ব্যাপারে অনলাইনে তথ্যের পরিমাণ সীমিত। এত বড় দুই খুনীর ব্যাপারে কিংবা তাদের বিরুদ্ধে আসা রায়ের ব্যাপারে সবাইকে জানানো তাই কর্তব্য বলেই মনে করেছি। লেখাটা আপনাদের কাজে লাগলে কিংবা এই লেখা পড়ে আপনারা কেউ উপকৃত হলে আমার এইসব পরিশ্রম স্বার্থক মনে হবে। সোনেলার ব্লগারদের অনেক ভালোবাসা ও শুভেচ্ছা।

Friday 19 June 2015

দি কিউরিয়াস কেইস অফ কাদের মোল্লা এবং সাক্ষী মোমেনা

সাফী নামে একজন ভদ্রলোক আরিফ রহমান ভাইয়ের একটি পোস্ট “কসাই কাদের আর মোল্লা কাদের নাকি এক ব্যাক্তি ছিলেন না; বীরাঙ্গনা মোমেনা বেগম আমায় ক্ষমা করবেন…” এ একটি মন্তব্য করেছেন।

অনেক মন্তব্যের ভেতর এই মন্তব্যটি আমার নজর কেড়েছে এবং একই সাথে বিরক্তিও উৎপাদন করেছে একটা ব্যাপার যে মোটামুটি অনেক যায়গাতেই শুনেছি এই গুজব যে, এই কাদের মোল্লা সেই কাদের মোল্লা না, সাক্ষী মোমেনা ভুয়া ইত্যাদি। খুব স্বাভাবিক ভাবেই আমি এই ব্যাপারগুলো পর্যালোচনা করেছি আমার নিজস্ব চিন্তা, চেতনা এবং অবশ্যই আইনী বলয় থেকে। এই পুরো ব্যাপারটি-ই যেহেতু আইনী ব্যাপার, সুতরাং গুজবে কান দেয়ার এখানে কোনো রকমের সুযোগ নেই।

অভিজিৎ’দা সাফী সাহেবের এই মন্তব্যটি আমার নজরে এনেছেন, প্রথমেই অভিজিৎ’দা কে অনেক ধন্যবাদ। এই মন্তব্য না পড়লে এই বিষয়ে এই দীর্ঘ লেখাটি হয়ত হোতো না। আমি মনে করি সাফী সাহেবের এই মন্তব্যের উত্তর দেবার ফলে কাদের মোল্লা বিষয়ক নানান গুজবের অবসান হবে এবং সাক্ষী মোমেনাকে নিয়েও মিথ্যাচার শেষ হবে।

Friday 12 June 2015

জামায়াতের বিরুদ্ধে মামলা আর আইনমন্ত্রীর অদ্ভুত তিন কারন

গতকালই প্রথম আলোতে প্রকাশিত হয়েছে আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের বক্তব্য। যেখানে তিনি বলেছেন, “আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনালস) আইনে মুক্তিযুদ্ধকালে অপরাধী সংগঠন হিসেবে জামায়াতে ইসলামীর বিরুদ্ধে মামলা ও বিচার করা আপাতত সম্ভব নয়।” এই বক্তব্যের পেছনে তিনি যে তিনটি কারন দেখিয়েছেন সে কারনগুলোও নীচে দিয়ে দিচ্ছি-


প্রথম কারন,
আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনালস) আইন, ১৯৭৩-এ সংগঠনের শাস্তির বিধান নেই।

দ্বিতীয় কারন,
জামায়াতের নিবন্ধনের ব্যাপারে একটি মামলা ইতিমধ্যে আপিল বিভাগে আছে৷ এর মধ্যে ট্রাইব্যুনালের আইনে কোনো অভিযোগ আনা হলে ওই মামলায় কোনো প্রভাব পড়বে কি না, তা দেখতে হবে৷ এই পর্যায়ে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘আমি মনে করি, প্রভাব পড়বে৷ এখন এসব অন্যান্য পারিপার্শ্বিক দিক বিবেচনা করে এগিয়ে যেতে হবে৷ সে ক্ষেত্রে সময় লাগবে৷’

Tuesday 9 June 2015

গ্লোবাল সামিট লন্ডনঃ ৭১এর যে নৃশংসতার কথা পৃথিবীকে জানতেই হবে

                                                                                                        শুরুর কয়েকটি কথাঃ

আমার এই লেখাটি শুরু করবার আগে আমি বিখ্যাত অভিনেত্রী এঞ্জেলিনা জোলির নিজের লেখা একটি প্রবন্ধের অনুবাদ শুরুতেই এই লেখায় তুলে দিতে চাই। ২০০৮ সালে ব্রিটিশ জার্নাল দি ইকোনোমিস্টে “এ ইয়ার অফ একাউন্টিবিলিটি” শীর্ষক প্রবন্ধে জোলি লিখেছিলেন কিছু অবাক করে দেবার মত কথা। জোলি UNHR এর গুড উইল এম্বাসেডর হিসেবে মধ্য আফ্রিকার দেশ শাদ এর পূর্বাঞ্চলে গিয়েছিলেন শরণার্থী ক্যাম্প পরিদর্শনে। শাদ এই শরণার্থীরা এসেছিলেন সুদান থেকে। ২০০৩ থেকে সুদানের লিবারেশন মুভমেন্ট আর্মি এবং জাস্টিস এন্ড ইকুয়ালিটি মুভমেন্ট দুইটি গেরিলা দল অস্ত্র তুলে নেয় সরকারের বিরুদ্ধে। সরকারের বিরুদ্ধে তাদের অভিযোগ অসংখ্য। বঞ্চনা, ডিস্ক্রিমিনেশন, নির্যাতন, দীর্ঘদিনের অবহেলা, সবকিছু মিলে দক্ষিন সুদানের অধিবাসীরা চাইলো স্বাধীন দক্ষিন সুদান আর শুরু হলো যুদ্ধ। যুদ্ধ হলে সাধারণত যা হয় তাই হোলো। অসংখ্য নিরীহ মানুষকে খুন হতে হয়, নারী-শিশুরা হয় ধর্ষিত, লক্ষ কোটি মানুষ হয় ঘর হারা, স্বপ্ন হারা, পথ হারা। সুদানের রাষ্ট্রপতি ওমর আল বশির এই বিদ্রোহ মেনে নিতে চাইলো না আর শুরু হোলো সেই অঞ্চলের মানুষদের উপর গণহত্যা। ঠিক এমন করেই দক্ষিন সুদানের অসংখ্য মানুষ তাদের সীমান্ত নিকটবর্তী দেশ শাদে আশ্রয় নিলেন।

Sunday 7 June 2015

বিচারহীনতার ৪২ বছর, কিন্তু আর না…ফারজানা

এই লেখার বিষয়ঃ এই লেখাটি শুরু করবার আগেই সকল পাঠকদের এক বাক্যে জানিয়ে দেই এই লেখাটির মূল বিষয় বস্তু বাংলাদেশের চলমান আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালে চলতে থাকা বিচার নিয়ে। যেই স্পেশাল ট্রাইবুনালে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময়ে সংঘঠিত হওয়া নানা ধরনের আন্তর্জাতিক অপরাধ সমূহের বিচার হচ্ছে। জানিয়ে রাখা ভালো এই বিচারিক প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বর্তমান সরকারের আমলে ২০১০ সালের ২৫ শে মার্চ থেকে।


লেখার কারনঃ


এই লেখাটি মূলত মুক্তমনায় আমার আগের একটি লেখার প্রেক্ষিতে আসা প্রতি উত্তরের পাল্টা উত্তর হিসেবে দিচ্ছি। আপনারা হয়ত অনেকেই পড়ে থাকবেন কিংবা দেখে থাকবেন যে আমি সম্প্রতি মুক্তমনা ব্লগে কাদের মোল্লার ফাঁসী হবার পর পর এই ফাঁসী তথা বিচার নিয়ে বিভিন্ন প্রোপাগান্ডা ও অপঃপ্রচারের জবাব দিয়েছি একটি প্রবন্ধের মাধ্যমে [ আমার সে লেখাটি পরা যাবে এখান থেকে]

মূলত সেই লেখাটি মুক্তমনার একজন ব্লগার আরিফ ভাইয়ের একটি লেখাতে সাফী নামের এক ব্যাক্তির মন্তব্যের জবাবের প্রেক্ষিতে হলেও এই লেখাটি আরো একজনকে জানাবার কিংবা উত্তর দেবার উদ্দেশ্যেও লিখিত হয়েছিলো। [আরিফ ভাইয়ের সে প্রবন্ধটি পাওয়া যাবে এখানে]

সেই ব্যাক্তির নাম ফারজানা মাহবুবা [ফামা] ফেসবুকে গত ৯-ই ডিসেম্বর তিনি কাদের মোল্লার ফাঁসী নিয়ে এবং এই পুরো বিচার ব্যাবস্থা নিয়ে যত্তসব মনগড়া কথা বার্তা লিখেছিলেন এবং সতর্ক ভাবে লক্ষ্য করেছিলাম তিনি আইন, আদালত, বিচার ব্যাবস্থা সব কিছু নিয়েই জনমনে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছেন। সুতরাং দেশের একজন সচেতন নাগরিক এবং আইন-আদালতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল নাগরিক হিসেবে মনে করেছিলাম এইসব অপঃপ্রচারের যথাযথ আইনী এবং যৌক্তিক উত্তর দেয়া খুব প্রয়োজন।

Saturday 6 June 2015

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল ও বিচারিক বিষয়ের কিছু আইনী ভাষ্য

আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত বাংলাদেশের মূল ভবন 
বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালের মাধ্যমে মহান মুক্তিযুদ্ধে ঘটে যাওয়া বিবিধ আন্তর্জাতিক অপরাধের বিচার একটি ঐতিহাসিক বিচা্রের উদাহরণ। পৃথিবীর ইতিহাসে বাংলাদেশের এই বিচার করবার পুরো প্রক্রিয়া, রাষ্ট্রের সদিচ্ছা, প্রসিজিওর, বিচারহীনতার সংস্কৃতিকে নির্মূল করবার পদক্ষেপ এসব সব কিছু মিলিয়েই এই ট্রাইবুনাল, এই আদালত, এই আইন স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। আন্তর্জাতিক অপরাধ আইন নিয়ে যারা পড়েন, গবেষনা করেন, আগ্রহী তাঁদের সকলের জন্যই বাংলাদেশের এই আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের বিচার সব সময়ের জন্য অনুসরণীয় হয়ে থাকবে।

Thursday 4 June 2015

চৌধুরী মইনুদ্দিন ও আশরাফুজ্জামনের এক্সট্রাডিশন সম্পর্কিত কিছু আইনী ভাবনা

আপনারা সকলেই জেনে থাকবেন যে একাত্তরের ঘাতক, বুদ্ধিজীবি হত্যাকারীদের অন্যতম দুই ভয়ংকর অপরাধী চৌধুরী মইনুদ্দিন এবং আশরাফুজ্জামান খানের ফাঁসির দন্ড হয়েছে বাংলাদেশে চলমান আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের রায়ের মাধ্যমে। কিন্তু হতাশার বিষিয় হচ্ছে তাদের এখনো দেশে ফেরত আনা যায় নি। চৌধুরী মইনুদ্দিন ও আশরাফুজ্জামান খানের বিচার বিষয়ক একটি আলোচনা আমি আমার আগের পোস্টে করেছি কিংবা এই ব্যাপারে হয়ত বিশদ জানাও গেছে কিন্তু এই পুরো বিচার-ই মূলত ব্যার্থতায় পরিণত হবে যদি এই দুই কনভিক্টেড অপরাধীকে বাংলাদেশে ফিরিয়ে এনে সাজা কার্যকর করা না যায়। বাংলাদেশের রাজনীতি আর তার দীর্ঘ মারপ্যাঁচে স্বাভাবিকভাবেই এই দুই অভিযুক্তের ব্যাপারে আর কোনো পদক্ষেপ স্বাধীনতার ৩৯ বছর পর্যন্ত না নেয়া হলেও এটা সত্য যে এই দুই অভিযুক্তের ব্যাপারে সাধারণ জনতা কিংবা ভিক্টিম পরিবারের সদস্যরা বরাবরই উচ্চকিত ছিলেন এবং বৃটেন-আমেরিকার মিডিয়াও সব সময় উচ্চকিত ছিলো। এত কষ্ট, ত্যাগ ও সংগ্রামের পর অবশেষে এই অপরাধীর বিচার বাংলাদেশের মাটিতে হয়েছে। কিন্তু অপূর্ণতা রয়েই গেছে শেষ পর্যন্ত। কেননা এই দুই খুনী এই দেশে নিরাপদে জীবন যাপন করছে এবং এই চলমান ট্রাইবুনালের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় ক্রমাগত বিষেদাগার করেই চলেছে।

Monday 1 June 2015

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালঃ হতাশা কেবল গভীর হয়

প্রারম্ভিক বক্তব্যঃ এ লেখাটা যখন লিখব বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছি তারপর থেকেই আমি ঠান্ডা মাথায় কয়েকবার ভেবেছি এই লেখাটা কি সঠিক হচ্ছে কিনা। কেননা লেখাটা আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল নিয়ে এবং লেখাটার আষ্টে পৃষ্ঠে জড়িয়ে রয়েছে প্রচন্ড হতাশা্র গল্প। এই ট্রাইবুনাল নিয়ে এই পর্যন্ত যতবার লিখেছি যে কোনো মাধ্যমেই কিংবা যেখানে যেখানেই বলেছি প্রতিটি স্থানেই চেষ্টা করেছি এই ট্রাইবুনাল নিয়ে আশার কথা বলতে। বেছে বেছে সব সময়ই ট্রাইবুনালের পজিটিভ দিকগুলোকে তুলে ধরবার চেষ্টা করেছি।

Monday 25 May 2015

মৃত্যু উপত্যাকার নুরুজ্জামানেরা ও বেগম জিয়া

এক
প্রথমেই যে বর্ণনা দেব সেটির সময়কাল ফেব্রুয়ারী ১, ২০১৫। বর্ণনার মূল চরিত্র নুরুজ্জামান কবে কোথায় জন্মেছেন সেটা আমাদের জানা নেই। নুরুজ্জামানের বেড়ে ওঠা কোথায় সেটিও আমরা জানিনা। আমরা জানি ঘটনার ঠিক মাঝপথ থেকে। যেখানে একজন দর্শক হিসেবে আমরা জানতে পারলাম নুরুজ্জামান ব্যবসার কাজে চট্রগ্রাম যাবেন। নুরুজ্জামানের দশম শ্রেণী পড়ুয়া মেয়ে মাইশা তাসনিম বায়না ধরেছেন বাবার সাথে তিনিও চট্রগ্রাম যাবেন। চট্রগ্রামের কাছেই তো কক্সবাজার। সুতরাং বাবা যখন চট্রগ্রামে যাবেনই তখন কক্সবাজারটাও এ যাত্রা ঘুরে দেখবার একটা সুযোগ থাকে। বাবাকে এই কথা বলতেই তিনি মেয়ের এই বায়না ফেলেন নি। মেয়ের বায়না মেটাতে গিয়ে সিদ্ধান্ত নিলেন তাহলে পরিবারের সবাইকে নিয়েই এই যাত্রা কক্সবাজার দেখে আসা যাক। সুতরাং তিনি সাথে নিলেন প্রিয় কন্যা, পূত্র আর স্ত্রী মিতা মাহফুজাকে কক্সবাজারে স্ত্রী, পূত্র আর মেয়েকে নিয়ে ঘুরেছেন নুরুজ্জামান। জীবনের আনন্দের সময়গুলো পার করেছেন পুরো পরিবারকে নিয়ে

Thursday 22 January 2015

প্রসঙ্গঃ ৭২ এর দালালদের বিচার। আমাকে বিষ্মিত করলেন আবুল মনসুর আহমদ

রাজনীতিবিদ, সাংবাদিক ও বিখ্যাত লেখক আবুল মনসুর আহমদকে পরিচয় করিয়ে দেবার মত আমি যোগ্য লোক নই। জীবনের যতদিন বেঁচে থাকবার আপাতঃ সম্ভাবনা রয়েছে সেই সময়েও এই ভদ্রলোকের সমান যোগ্যতা হবে কিনা সেটা তীব্র সন্দেহের ও সম্ভাবনাসূচক গ্রিড বিবেচনায় অসম্ভব। উনি আমার অন্যতম একজন প্রিয় লেখক। স্যাটায়ার যে একটা শিল্প এবং এই শিল্প যে কতটা রূপমাধুর্যে হাজির হবার যোগ্য পাঠকের সামনে সেটা আবুল মনসুর আহমেদের বই পাঠ না করলে আমার বুঝা হোতো কিনা আমি জানিনা। বাংলাদেশে গিয়ে শাহবাগ, নিউমার্কেট আর অন্যান্য স্থানের বইয়ের দোকান গুলো ঘেঁটে আবুল মনসুর আহমেদের বইগুলো খুঁজে বের করে আনতে পারবার মধ্যেও আমি আনন্দ খুঁজে পাই। এই কথাগুলো বলবার প্রধানতম কারন আর কিছুই না, এটা বোঝানো যে লেখক আবুল মনসুর আহমদ আমার কাছে কতটা প্রিয় ও শ্রদ্ধার।

একেবারে কৈশোরে আমার বাবার বইয়ের শেলফ থেকে আমার খন্ড খন্ড আকারে পড়া হয়েছিলো তাঁর বিখ্যাত গ্রন্থ “আমার দেখা রাজনীতির পঞ্চাশ বছর”। সেসময় ওই গ্রন্থের অনেক প্রেক্ষাপট, ঘটনা এবং ব্যাখ্যা আমার কাছে দুর্বোধ্য ছিলো কেননা ঐসব ঘটনাগুলোর অনেক প্রাথমিক প্রেক্ষাপটের ব্যাপারে আমার ধারনা ছিলো অপ্রতুল। সে কারনেই কৈশোরে যা পড়েছি ও যা বুঝতে পেরেছি সেটার সাথে এই সময়ের পাঠ ও তার বুঝবার মধ্যে একটা তাৎপর্যপূর্ণ পার্থক্য আমি অনুধাবন করতে পারি।

 গত প্রায় ৭-৮ বছর ধরেই আমি স্পেসেফিকভাবে মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে যেসব অপরাধ সংঘটিত হয়েছে সেগুলোর আইনী দিক নিয়ে আমি গবেষনা করবার চেষ্টা করছি। এই অপরাধ সংঘটনের দায়ভার যাদের উপর মূলত বর্তায় তাদের বিচার প্রক্রিয়া বাংলাদেশে প্রথমবারের মত শুরু হয় ১৯৭২ সালে। যে আইনে এই বিচারটুকু সম্পাদিত হচ্ছিলো সেই আইনের একটা প্রচলিত নাম হচ্ছে ৭২ এর দালাল আইন যদিও তার কেতাবী নাম হচ্ছে Bangladesh Collaborators (Special Tribunal) Order 1972, এই বিচার প্রক্রিয়া মূলত স্থগিত হয় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে স্বপরিবারে খুন করবার মাধ্যমেই। যার ধারাবাহিকতায় দেখা যায় যে বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের ঠিক ৪ মাস ১৬ দিনের মাথায় অর্থ্যাৎ ৩১ শে ডিসেম্বর ১৯৭৫ সালে এই দালাল আইনটি রহিত করা হয় এবং বিচার প্রক্রিয়া সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করে দেয়া হয়। আপনারা এটা সকলেই জানেন যে ২০১০ সালের ২৫ শে মার্চ থেকে এইসব দালালদের বিচার বাংলাদেশ সরকার পুনরায় শুরু করে ১৯৭৩ সালের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালস আইন-১৯৭৩ এর মাধ্যমে। এইসব দালালদের বিচার কেন দালাল আইনে না হয়ে ১৯৭৩ এর আইনে হচ্ছে সেটির আইনী ব্যাখ্যা নানান সময়ে নানান যায়গায় দিয়েছি সুতরাং আজকে সেই আলোচনাতে যাচ্ছিনা এবং এই লেখায় সে আলোচনা প্রাসঙ্গিক বলে আমি মনে করিনা।