Saturday 19 December 2015

অস্ট্রেলিয়া থেকে ব্যারিস্টার ও সলিসিটর হতে ইচ্ছুক যারা

ভূমিকাঃ

আমার পরিচিত কিংবা অপরিচিত বিভিন্ন রেফারেন্সের সূত্র ধরে অনেকেই প্রায়শঃ জানতে চান যে তিনি অস্ট্রেলিয়া থেকে কিভাবে ব্যারিস্টার ও সলিসিটর হতে পারবেন। এরকম অনেক কৌতূহলের প্রেক্ষিতেই মনে হোলো এই বিষয়ক একটি সাধারণ ধারনা যদি আমি পাঠকদের দিতে পারি তবে যারা অস্ট্রেলিয়া থেকে ব্যারিস্টার ও সলিসিটর হতে চান তাঁদের জন্য খুব সুবিধা হবে।

আগেই বলে নেয়া ভালো যে এই লেখাটি একেবারে খুব বিস্তারিত আলোচিত হচ্ছে না। অস্ট্রেলিয়া থেকে ব্যারিস্টার এবং সলিসিটর হওয়া খুব দীর্ঘ একটি প্রক্রিয়া। প্রচুর বিধি রয়েছে, নিয়ম রয়েছে, ফরমালিটিস রয়েছে। সবচাইতে বড় কথা হচ্ছে এই কোর্স করতে হলে আপনাকে প্রচন্ড ধৈর্য্যশীল এবং পরিশ্রমী হতে হবে। পড়ালেখাতে সামান্য যদি গাফিলতি করেছেন তাহলে সেটির দায় পুরো কোর্স জুড়ে আপনাকেই বহন করতে হবে এবং এমনকি এই কোর্স থেকে আপনি ছিটকেও পড়তে পারেন।

অস্ট্রেলিয়ায় আইন প্র্যাক্টিস বেশ প্রতিযোগিতামূলক। প্রতিবছর-ই অনেক নবীন আইনজীবি কোর্স শেষ করে বের হচ্ছেন কিন্তু বাস্তব জীবনে কে কতটুকু ভালো করবেন সেটি আসলে নির্ভর করে ব্যক্তির আইন বুঝবার ক্ষমতা, কতটুকু পরিশ্রম করতে পারছেন, কোন সিনিয়রের সাথে সহকারী হিসেবে কাজ করছেন, কমিউনিকেশন দক্ষতা কেমন, ইংরেজীতে বলতে পারবার দক্ষতা কেমন কিংবা আইনের সুনির্দিষ্ট কোন অংশে কাজ করছেন বা করবেন এইরকম নানাবিধ সিদ্ধান্তের উপর।

Saturday 5 December 2015

এমন তো কথা ছিলো না...

রিচার্ড আর ক্রিস্টিনা সারা রাস্তা জুড়েই কথা বলছিলো স্কেট বোর্ডিং নিয়ে, ক্যানাল বোটিং নিয়ে, কবে কে কখন বাঙ্গি জাম্প দিয়েছে, স্কাই ডাইভ করেছে সেসব নিয়ে। আমিও সে আলোচনায় মাঝে মধ্যে ঢুকি, টুকটাক অন্য কিছু নিয়েও আমাদের কথা হয়, তারপরেও আমি কেন জানি আনন্দ পাইনা।আমি ওদের পেছনে পেছনে হাঁটি আর ওরা সামনে দু’জন কথা বলে জীবনের অসংখ্য আওনন্দের ঘটনা নিয়ে। কোন দেশের কোন খাওয়া ভালো, কোন রাস্তা ভালো, কোন শহর ভালো...আর কত কি...

কি এক শূন্য চাহনি নিয়ে বেইজিং এর ব্যস্ত রাস্তার দিকে তাকিয়ে থাকি। এত ঘন বসতিপূর্ণ একটা দেশ অথচ কি চমৎকার করে সাজিয়ে রেখেছে। চায়না ছাড়া এই পৃথিবী মোটামুটি অচল আর আমি সেই চায়নাতে দাঁড়িয়ে আছি ভাবতেই আবার দ্রুত চারিদিকে তাকিয়ে নেই এক নজর। আর ঘন্টা দশেক পর এই শহর ছেড়ে পাড়ি দেব লন্ডনে, তাই শুধু যত দ্রুত দেখে নেয়া যায়...

Friday 4 December 2015

আন্তর্জাতিক অপরাধ আইনের থিওরেটিকাল কাঠামো ও বাংলাদেশের ট্রাইবুনালঃ আইনী পর্যবেক্ষণ

২০১০ সালের ২৫ শে মার্চ তারিখে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালের সূচনা হয়। মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানী ও তাদের দোসরদের মাধ্যমে সংগঠিত নানাবিধ আন্তর্জাতিক অপরাধের সুষ্ঠু বিচারের লক্ষ্যেই এই ট্রাইবুনাল গঠিত হয়। ১৯৭২ সালের দালাল আইনের মাধ্যমে শুরু হওয়া বিচার যদিও সে সময়ে আশার আলো দেখিয়েছিলো কিন্তু ১৯৭৫ পরবর্তী সময়ে সেই বিচার বন্ধ করবার মধ্য দিয়ে এই বাংলাদেশ বিচারহীনতার দীর্ঘ ৩৯ বছর বিচারহীনতার এক কালো অধ্যায়ের মধ্য দিয়ে হেঁটে গেছে। এর ফলে বিচার প্রার্থী আর অপরাধীদের একই দেশে সহঅবস্থান নিশ্চিত হয়েছিলো এবং রাষ্ট্র তার জন্মের সূচনালগ্নেই বিচারপ্রার্থীদের উপর অন্যায়ের সূচনা করেছিলো এবং সেটি প্রকারন্তরে রাষ্ট্রের উপর অবিশ্বাস জন্মাবার সূচনা করে। কিন্তু ২০১০ সালে শুরু হওয়া আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল এই জন্মানো হতাশার মধ্যে এই বাংলাদেশ রাষ্ট্রকে পুনঃর্জন্ম দান করেছে। বিচারহীনতার লজ্জার একটা সংস্কৃতি থেকে বাংলাদেশ মুক্তি পথে ছুটে চলেছে এর চাইতে এত বড় আনন্দের আর কিছু নেই সম্ভবত।

পৃথিবীর ইতিহাসে বাংলাদেশের এই আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের বিচার করবার পুরো প্রক্রিয়া, রাষ্ট্রের সদিচ্ছা, প্রসিজিওর, বিচারহীনতার সংস্কৃতিকে নির্মূল করবার পদক্ষেপ এসব সব কিছু মিলিয়েই এই ট্রাইবুনাল, এই আদালত, এই আইন স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। আন্তর্জাতিক অপরাধ আইন নিয়ে যারা পড়েন, গবেষনা করেন, আগ্রহী তাঁদের সকলের জন্যই বাংলাদেশের এই আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের বিচার সব সময়ের জন্য ন্যায়বিচারের প্রশ্নে অনুসরণীয় হয়ে থাকবে।