Tuesday 14 August 2018

বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের বিচারঃ ইতিহাস, আইন, সাক্ষ্য ও পর্যালোচনা



বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার নথি-পত্র, জেরা-জবানবন্দী, মামলার কার্যক্রম এগুলো খুবই ঠান্ডা মাথায় মন দিয়ে পড়বার পর একজন সুস্থ মানুষ অল্প কিছুক্ষণের জন্য হলেও মুষড়ে পড়বে এই কথাটা আমি খুব নিশ্চিত করে বলতে পারি।

আপনি এই মামলার জেরা ও জবানবন্দী জানবার পরে যে ক্রোধে আচ্ছাদিত হবেন এবং যে ব্যাথায় আপনি নিমজ্জিত হবেন সেটি কোনো ভাষা দিয়ে বর্ণনা করা অসম্ভব। কতটা নিষ্ঠুর ও নৃশংস উপায়ে তাঁরা জাতির জনক সহ তাঁর পরিবারের সকল সদস্যকে হত্যা করেছে, সেটি আমি কোনোদিন লিখে প্রকাশ করতে পারব কিনা, আমি জানিনা। কিন্তু বাংলাদেশ একটা সভ্য জাতির মত পরম ধৈর্য্য নিয়ে এই সুনির্দিষ্ট বিচারকাজ চালিয়ে গেছে।

আমার ইতিহাস পাঠ অভিজ্ঞতা জানায় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর যখন সকল যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের প্রশ্ন উঠেছিলো তখন ইংল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী স্যার উইনস্টন চার্চিল এইসব অপরাধীদের বিচারের পরিবর্তে গুলি করে মারার পক্ষে ছিলেন। কিন্তু মিত্র বাহিনীর অন্যান্য দেশের বিরোধিতার সেটি আর সম্ভব হয়নি।

এই মামলা পরিচালনা করবার একবারে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত কার্যক্রম গুলো লক্ষ্য করলে দেখা যাবে এই ভয়ানক খুনীদের কি পরিমান সুযোগ ও সুবিধা দেয়া হয়েছিলো বিচারিক কার্যক্রমে। তাদেরকে ডিভিশন সুবিধা প্রদান থেকে শুরু করে কি সুবিধা ছিলোনা, যেটি দেয়া হয়নি?

আপনারা সকলেই জেনে থাকবেন যে বঙ্গবন্ধুর হত্যার বিচার যাতে না হতে পারে সে জন্য খুনী মোশতাক একটি অধ্যাদেশ জারি করে ১৯৭৫ সালের ২৬ শে সেপ্টেম্বর। এই অধ্যাদেশকেই কুখ্যাত "ইন্ডেমনিটি অধ্যাদেশ" বলে। যেই অধ্যাদেশের মাধ্যমে পরিষ্কার ভাবে বলে দেয়া হয় যে, খুনীদের বিরুদ্ধে কোন রকমের আইনী ব্যবস্থা গ্রহন করা যাবে না।


আসুন দেখে নেই কি লেখা ছিলো সেই অধ্যাদেশে-

Sunday 5 August 2018

সেই রাতে সৈন্যটি কি নিশ্চিন্তে ঘুমিয়েছিলো?

ওই রাতের সর্বশেষ হত্যাকান্ডের শিকার তিনি। মা'র কাছে যেতে চাইতেই এক সৈন্য তাঁকে মা'র কাছে পৌঁছে দেবে, এই কথা দিয়ে নিয়ে গিয়েছিলো দোতলায়। যাবার আগে মহিতুল ইসলামকে জিজ্ঞেস করেছিলেন, "ভাইয়া আমাকে মারবে না তো?"

যাবার পথে রাসেল বাবার রক্তমাখা দেহের উপর দিয়ে হেঁটে গেছে দোতলার সিঁড়ি বেয়ে। হয়ত বাবার দেহ দেখে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েছিলো শিশুটি। যে বাবার এত প্রিয় ছিলো, তাঁর রক্তাক্ত দেহ দেখে কি রাসেল যেতে চেয়েছিলো আর?

তিনি কি বাবাকে জড়িয়ে ধরেছিলেন তাঁর নরম তুলতুলে পবিত্র হাতে? বাবাকে একবার ছুঁয়ে কি দেখেছিলেন তিনি? একটিবার কি বাবার মৃত দেহের উপর আছড়ে পড়েছিলো রাসেল? বাবাকে কি শেষবারের মত চুমু খেয়েছিলো আমাদের রাসেল? ঠিক মানুষের মত দেখতে সৈন্যগুলো কি সে সুযোগ দিয়েছিলো রাসেলকে?

Thursday 1 March 2018

যুক্তির মাইক্রোস্কোপের নীচে ইয়েন ইয়েনের জবানবন্দীঃ কতটা সত্য বলেছেন?

ঘটনাস্থল-রাঙামাটি জেলার বিলাইছড়ির ফারুয়া ইউনিয়নের ওরাছরি গ্রাম। ছবিঃ পিনাকী দেব অপু

কেন লিখছি এই লেখা?

গত ২১ শে জানুয়ারী ২০১৮ দিবাগত রাত অর্থ্যাৎ ২২ শে জানুয়ারী ভোরে রাঙ্গামাটি জেলার, বিলাইছড়ি উপজেলার, ৩নং ফারুয়া ইউনিয়নের ওরাছড়া গ্রামে নিরাপত্তাবাহিনীর সদস্যে কর্তৃক একজন নারীকে ধর্ষন এবং অন্য নারীকে নির্যাতন করা হয়েছে বলে গুরুতর অভিযোগ তোলা হয়। এই অভিযোগের পর ঘটনা বহুদূর গড়িয়েছে এবং ব্যাপারটিকে নিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে যে রাজনীতি শুরু হয়েছে তা বিষ্ময়কর। 

স্বঘোষিত তথাকথিত রাণী ইয়েন ইয়েন এই পুরো ঘটনার রেশ ধরে গত ১৫ ফেব্রুয়ারী তার ফেসবুকে একটি জবানবন্দী পোস্ট করেন। যেখানে তিনি উল্লেখ করেছেন যে সেই দুই নারীকে তিনি তার দলবলসহ দেখতে যাবার পর তাকে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সদস্যরা হাসপাতালের মধ্যেই অন্তরীন করে রেখেছিলো এবং তিনি সেনাবাহিনীর এইসব বাঁধা অতিক্রম করে দেয়াল টপকে পালিয়েছিলেন, ১৫ মিনিট বন ও জঙ্গল দিয়ে দৌড়েছিলেন এবং পরে পানিতে ঝাঁপ দিয়ে আধাঘন্টা জলহস্তীর মত পানিতে মটকা মেরে পড়েছিলেন। তার পর তিনি লোকালয়ে ফিরে এসেছিলেন।

এই লেখাতে এই জবানবন্দীর পোস্টমর্টেম করা হবে। আমি দেখতে চেয়েছি যুক্তির মাইক্রোস্কোপের নীচে ইয়েনের জবানবন্দী আসলে কতটা সত্য। আমি একজন আইনজীবির চোখেই নয় বরং একজন সাধারণ মানুষের চোখেই আজ ইয়েন ইয়েনের বক্তব্যগুলোকে দেখবার চেষ্টা করব। আমি যেসব যুক্তি, যেসব ভ্যান্টেজ পয়েন্ট দিয়ে কথা বলব কিংবা যে অপিনিয়ন দেব সেটি একান্তই আমার। আপনারা পাঠকেরা বিবেচনা করবেন আমার বক্তব্যের জোর কিংবা কতটুকু যৌক্তিক। সে ভার আপনাদের কাছেই অর্পিত রইলো।

কিন্তু এগুলো সব জানবার আগে আসলে ঘটনার ইতিবৃত্ত-ও কিছুটা জেনে নেওয়া জরুরী।

আসুন শুরু করা যাক...

Monday 26 February 2018

সুপ্রিয় লাল কমরেড একটু পাছাটা উঁচু করুন, একটা সজোরে লাথি দিতে চাই

পাহাড়ের এক যুবক আমাকে গত পরশু খুব রেগে মেগে পার্বত্য চট্টগ্রাম রেগুলেশন-১৯০০ ইনবক্সে পাঠান। যেখানে তিনি আমাকে প্রচন্ড তীব্র ভাষায় বলেন, পারলে পড়ে দেখবেন। আমরা এই আইনে চলি, আপনাদের মতো না।

আজ সকালে রেগুলেশনটিতে চোখ বুলাচ্ছিলাম। মনটাই খারাপ হয়ে গেলো। মন খারাপ হোলো দুটো কারনে।

(১) এই বাংলাদেশের বুকে কত নীরব অন্যায় অজানা রয়ে গেলো
(২) মানুষ কিভাবে দাসত্বকে এইভাবে মেনে নেয়

আপনি নিশ্চই ভাবছেন উপরের কথাগুলো আমি কেন লিখেছি? আসুন একটু জেনে নেই।

পার্বত্য চট্টগ্রাম রেগুলেশন ১৯০০ এর ৪২(ক)(১) থেকে শুরু করে ১৭ ধারা পর্যন্ত যে কথাগুলো লেখা রয়েছে সেটিকে পরিষ্কার বাংলা ভাষায় "দাসত্ব" বলা যেতে পারে।

সেখানে লেখা রয়েছে-

Sunday 25 February 2018

হে পাহাড় তুমি বিকশিত হও... বিনাশ কর সামন্ত প্রভুকে


একাত্তরের ঘাতক-রাজাকার পার্বত্য চট্টগ্রামের স্বঘোষিত রাজা ত্রিদিব রায় ২০০৩ সালে একটি বই প্রকাশ করে। বইয়ের নাম "দি ডিপার্টেড মেলোডি" -[The Departed Melody, Memoirs, PPA Publications]। অনলাইনে অর্ডার করেছিলাম। গতকালই হাতে পেয়ে পড়া শুরু করেছি।

বইয়ের বিভিন্ন অংশ থেকে অল্প-বিস্তর উঁকি-ঝুঁকি দিতেই এক পৃষ্ঠায় দেখা গেলো এই ঘাতক আরেক ভয়ানক ঘাতক ফজলুল কাদের চৌধুরীকে বেশ প্রশংসায় ভাসিয়ে দিচ্ছে। তাকে "টাইগার" বলে অভিহিত করছে।

ফজলুল কাদের চৌধুরী কে, তা নিশ্চই সকলেই জানেন। একাত্তরের নৃশংস ঘাতক সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর বাবা। "রতনে রতনে চিনে, শুয়োর চিনবে ঘেচু"। সুতরাং ত্রিদিব ফকা'র প্রশংসা করবে এতে অবাক হবার কিছু নেই।

কিন্তু বিষ্ময়ের ব্যাপার হচ্ছে অন্য যায়গায়।

Saturday 24 February 2018

সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে প্রাচীন ন্যারেটিভঃ বাড়া ভাতে ছাই





[আমি লেখাটি উৎসর্গ করলাম আমার প্রিয় ভাই লেফটেন্যান্ট নিয়াজ হাসান আনন্দ-কে। বাবা-মা-পরিজন ছেড়ে যিনি দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষা করবার জন্য জীবনকে উৎসর্গ করবেন বলে মনস্থির করেছেন]

প্রথম ঘটনাটি বলছি। বহু বছর আগে লন্ডনে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক একটা আলোচনায় অংশ নেবার সৌভাগ্য হয়েছিলো। আমি খুব ভুল না করে থাকলে সালটা ২০০৯ অথবা ২০১০।

সেই আলোচনায় পার্বত্য চট্টগ্রামের অধিবাসী থেকে শুরু করে অনেকেই উপস্থিত ছিলেন। সকলেই বলা চলে সিভিল সোসাইটির অংশ। স্কুল শিক্ষক, অধ্যাপক, গবেষক ইত্যাদি গুনীজন।

আলোচনার একটা পর্যায়ে এক আপা (নাম বলছিনা) চট করে বলে বসলেন, (অনুলিখন) "নিঝুম আপনি জানেন না সেখানে বাংলাদেশ আর্মি মেয়েদের ধরে ধরে ধর্ষন করে, মাদকের ব্যবসা করে"

আমি খুব দ্রুত চারিদিকে তাকালাম। আমার সাথে থাকা **** ভাই ছাড়া আর বাকী সবাই খুব সম্ভবত এই অভিযোগে মাথা নাড়াচ্ছিলো। সবাই একমত। আমি আমার সকল বিষ্ময় নিয়ে জিজ্ঞেস করেছিলাম, (অনুলিখন)

Wednesday 21 February 2018

পার্বত্য চট্রগ্রাম ও সাম্প্রতিক ভাবনা

গত প্রায় দু'তিনদিন ধরে আমার ভাবনার ও পড়বার বিষয়ে খুব তীব্র আকার নিয়ে যোগ হয়েছে পার্বত্য চট্টগ্রাম। পার্বত্য চট্টগ্রাম ইস্যুতে দিনের পর দিন অভিযোগের তীর ক্রমাগত উঠেছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর দিকে।
পাহাড়ে পান থেকে চুন খসলে সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে যে রটনা, যে কুৎসা কিংবা যে সংবাদ্গুলো অন্তত পক্ষে আমার ফেসবুকের টাইমলাইনে ভেসে আসে, তা মোটেই সুখকর নয়।
আমার ফেসবুকে যেসব পলিটিকাল কর্মী ও মানবাধিকার কর্মীরা রয়েছেন এদের বেশীরভাগের বক্তব্য আমি পার্বত্য চট্টগ্রাম ইস্যুতে নির্মোহ মনে করিনা। তাই তাদের বক্তব্য একেবাড়ে চূড়ান্ত বলে গ্রহন করতে পারিনি। এই না করবার পেছনে আমার নিজস্ব একটি অবস্থান ও যুক্তি রয়েছে। আমি আসছি এই ব্যাপারে।
গত প্রায় বেশ কিছুদিন ধরে পার্বত্য চট্টগ্রাম দু'জন নারীকে ধর্ষন বিষয়ে আলোচনা তুঙ্গে। যথারীতি চোখ বন্ধ করে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে দোষ দিয়ে দুই তিনবার মিডিয়া ট্রায়াল হয়ে গেছে। স্বাভাবিক ভাবেই এই বিষয় আমার আগ্রহের চূড়ান্ত জন্ম দিয়েছে।

Sunday 21 January 2018

Synopsis of my upcoming book: Misuse of The Muslim Identity during the Trials Of 71’ War Criminals





The Pakistan army and their various Bangladeshi collaborators conducted appalling acts of genocide during the Liberation War in 1971. They took the lives of 30 lac common Bangladeshis, maybe even more, whilst harassing and persecuting a further 4 lac women and children. Within this murderous scheme outlined and executed by the Pakistani army, there were other factors in play here namely a few political groups, individuals, organizations and forces which played at times either directly or indirectly assisted the Pakistani army in that murderous rampage of theirs.

Among those during the war, if we are looking to name some of the chief collaborators, we can talk about the Jamaat-E-Islami, Nizam-E-Islami, Pakistan Muslim League and Pakistan Democratic Party (PDP).