Thursday, 27 March 2014

শাহীনের মৃত্যুর পর

শাহীনের মৃত্যুর পর আমার জীবনটা এক রাতে অনেকখানি বদলে গেছে। চারদিকে মানুষজন গত চব্বিশ ঘন্টায় অসহ্য লাগা শুরু হয়ে গেছে।

জানিনা কি হয়েছে আমার, তবে এইটুকু জানি কিছুদিন ডুব দিতে হবে। চারিদিকের কোলাহল ছেড়ে নিজের জন্য সময় বের করতে হবে। শেষ পর্যন্ত হয়ত আমরা নিজের অস্তিত্ব নিয়েই ব্যাস্ত হয়ে পড়ি, নিজের বেঁচে থাকা, নিজের শান্তি এসব নিয়েই। ফেসবুকের একাউন্টটা ডিএক্টিভেট করে দিয়েছি আপাতত। ভালো লাগেনা কিছু। ভালো লাগেনা মানুষ।

দুপুরে গিয়েছিলাম পাশের সেমিটারীতে। এমনিই। কোনো কারন নেই। প্রায় ঘন্টা খানিক ধরে দাঁড়িয়ে রইলাম। খুব বৃষ্টি হচ্ছিলো সে সময়। একটা কবরের গায়ে লেখা ছিলো "শুয়ে থাকো পূত্র আমার, বাবা আসছি শিঘ্রী"

Wednesday, 26 March 2014

আশ্চর্য ঘুম তুমি জেগে ওঠো


এক

আমার সেঝো কাকা বিলাপ করে কাঁদছেন মেডিকেল কলেজের আই সি ইউ এর সামনের কোনো একটা যায়গায়, স্মৃতি বলতে আমার ওইটুকুই। আমি তখন কিশোর। কাকা হারিয়েছেন প্রাণ প্রিয় স্ত্রী আর আমাদের যৌথ পরিবারে আমার মত সকল কাজিনরা হারিয়েছি "নতুন" চাচীকে। বিয়ের তিন বছর পর্যন্ত যিনি আমাদের নতুন চাচী ছিলেন। যিনি আমাদের চকোলেট দিতেন, আদর করতেন, বাবার মার থেকে বাঁচাতেন। আমার চাচাতো বোনকে জন্ম দিতে গিয়ে তিনি হারিয়ে গেলেন। কাকা সেদিন কিছু একটা বলতে বলতে, চিৎকার করতে করতে কাঁদছিলেন হাসপাতালের বারন্দায়। কি বলছিলেন তা আজ আর মনে নেই। চেষ্টা করলেই হয়ত মনে হবে, কিন্তু চেষ্টা করতে ইচ্ছে হয়না আমার। সব কিছু অর্থহীন লাগে।

Saturday, 15 March 2014

পেয়ে যাওয়া এক আজব ক্ষত

মুক্তিযুদ্ধের কোনো গল্প শুনলেই আমাদের চোখের সামনে যে ব্যাপারটি ভেসে ওঠে তা হচ্ছে কিছু পাকি হানাদার ধরে ধরে আমাদের বাবা-ভাইদের মেরে ফেলছে কিংবা আমাদের মা আর বোনদের ধর্ষন করছে আর কিছু রাজাকার প্রচন্ড দূর্গন্ধযুক্ত মুখে মারহাবা-মাশাল্লাহ-শুকরিয়াএই জাতীয় আওয়াজ তুলছে । দৃশ্যগুলো ভয়াবহ ভাবেই ভেতরে ঘুরপাক খায় । আমি জানিনা যারা আমার মত মুক্তিযুদ্ধ দেখেন নি, তারা কেমন করে মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে ভাবেন বা মনে মনে কল্পনা করেন । আমার বাবা আমাদের মুক্তিযুদ্ধের গল্প বলতেন মাঝে সাঝে । সে সময় গল্পগুলো খুব একটা জমত না । দুপুরে ভর-পেট খাবার পর বাবা একটা পান মুখে দিতেন কিংবা একটা সিগারেট ধরাতেন । সে সময় আমিও যে ক্ষুদার্থ থেকে তার গল্প উপভোগ করতাম এমনটি নয় । আমিও রুই-কাতলা-মৃগেল-গরু ও মুরগীর বিভিন্ন অংশের মাংশ সাঁটিয়ে, খাদ্যনালী ব্যাপক আকারে পরিপুষ্ট করে বাবার কাছে মুক্তিযুদ্ধের কথা শুনতাম ।