Thursday 27 March 2014

শাহীনের মৃত্যুর পর

শাহীনের মৃত্যুর পর আমার জীবনটা এক রাতে অনেকখানি বদলে গেছে। চারদিকে মানুষজন গত চব্বিশ ঘন্টায় অসহ্য লাগা শুরু হয়ে গেছে।

জানিনা কি হয়েছে আমার, তবে এইটুকু জানি কিছুদিন ডুব দিতে হবে। চারিদিকের কোলাহল ছেড়ে নিজের জন্য সময় বের করতে হবে। শেষ পর্যন্ত হয়ত আমরা নিজের অস্তিত্ব নিয়েই ব্যাস্ত হয়ে পড়ি, নিজের বেঁচে থাকা, নিজের শান্তি এসব নিয়েই। ফেসবুকের একাউন্টটা ডিএক্টিভেট করে দিয়েছি আপাতত। ভালো লাগেনা কিছু। ভালো লাগেনা মানুষ।

দুপুরে গিয়েছিলাম পাশের সেমিটারীতে। এমনিই। কোনো কারন নেই। প্রায় ঘন্টা খানিক ধরে দাঁড়িয়ে রইলাম। খুব বৃষ্টি হচ্ছিলো সে সময়। একটা কবরের গায়ে লেখা ছিলো "শুয়ে থাকো পূত্র আমার, বাবা আসছি শিঘ্রী"

কবরটার সাথে আরো দুইটা এপিটাফ। পূত্রের মৃত্যু হয়েছিলো ১৯৭৮ সালে। জন্ম ১৯৬০। বাবা ছেলেকে সঙ্গ দিতে এসেছেন শেষ পর্যন্ত ১৯৮৫  সালে আর তাঁর মা তারো কয়েকবছর পরে। সালটা ভুলে গেছি। অনেক্ষণ ধরে এই ঘুমকাতুরে পরিবারের সামনে দাঁড়িয়ে রইলাম অনেক্ষণ। ক্ষীণ স্বরে কি একটা যেন বলবার চেষ্টাও করলাম। বুক থেকে কি একটা যেন দলা পাকিয়ে উঠতেই আর এগুতে পারিনি খুব একটা। কেমন জানি একটা অভিমানের মত হোলো । কার ওপর অভিমান, কার উপর বিরাগ সেটিও জানা নেই। নিয়তির উপর খুব সম্ভবত...কে জানে...

শাহীনের এই ছবিটির ভেতর কি একটা যেন গভীর ব্যাপার আছে। খাঁচার ভেতর আটকে থাকা রেপ্লিকা পাখি, বন্ধ দরজা জানালার ভেতর জানি কি একটা শব্দ আছে ঠিক ধরতে পারিনা। আজকে অনেক্ষণ তাকিয়ে রইলাম ছবিটির দিকে। তাকিয়ে থাকাই সার...গলার ভেতর সেই তাল পাকানো কষ্টটা সব ভোঁতা করে দিয়ে গেছে আমার জীবন যাপন...

শাহীনের মৃত্যুর পর আমি ভালো নেই। শাহীনের মৃত্যুর পর আমার আর কিছুই ভালো লাগেনা।


No comments:

Post a Comment