এরই মধ্যে যারা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীকে নিয়ে আমার নিজের ব্লগে কিংবা ফেসবুকে নানাবিধ লেখা দেখেছেন তারা হয়ত জানেন যে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর মামলাটি নিয়ে আমি নানাবিধ আঙ্গিকে লেখা লিখেছি এবং আপনাদের নানাবিধ তথ্য দেবার চেষ্টা করেছি। কিন্তু আজকে আমার চোখে এক মারাত্নক ব্যাপার ধরা পড়লো। এই তথ্যটি এসেছে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর পক্ষে সাফাই সাক্ষী দিতে চাওয়া ৫ জন পাকিস্তানীর মধ্যে দুইজনের এফিডেভিট আরো একবার ভালো করে পড়বার পর।
এই দুইজন ব্যাক্তির নাম হচ্ছে ইসহাক খান খাকওয়ানি এবং রিয়াজ আহমেদ নুন।
এর আগে আপনাদের আমি এই প্রত্যেক পাকিস্তানীদের এফিডেভিট উল্লেখ করে কার এফিডেভিটে কি কি দূর্বলতা রয়েছে সেটির একটা সিনোপসিস টেনেছিলাম আমার আগের লেখায়। কিন্তু আজকে পুনরায় সেসব এফিডেভিট আরো সুক্ষ্ণ ভাবে পড়তে গিয়ে হঠাৎ করে এমন একটি বিষয় নজরে আসলো যেটি আগে চোখে পড়েনি।
এই দুইটি বিষয় এতই গুরুত্বপূর্ণ যে সাকার মামলার বিষয়ে চলা প্রোপাগান্ডাটিকে হয়ত অনেকটা স্তিমিত করে দেবে। আসুন তাহলে দেখে নেই পুরো ব্যাপারটি।
ইসহাক খান খাকওয়ানি নামের এক ব্যাক্তি যিনি একজন পাকিস্তানী একজন নাগরিক এবং এক সময় পাকিস্তানের মন্ত্রীও ছিলো। তিনি সাকার পক্ষে একটি এফিডেভিট দেন। এফিডেভিটটি পাওয়া যাবে এখানে।
আবার অন্যদিকে রিয়াজ আহমেদ নুন নামে আরেক পাকিস্তানী নাগরিকও সাকার পক্ষে একটি এফিডেভিট প্রদান করে। সেই এফিডেভিটটি পাওয়া যাবে এখানে।
এখন এই দুইটি এফিডেভিট যদি আমরা একটু মনোযোগ দিয়ে পড়ি তাহলে আমরা দেখতে পাই যে-
ইসহাক খান খাকওয়ানি তার এফিডেভিটে বলেছে যে সালাউউদিন কাদের চৌধুরী, নাইম আখন্দ এবং খাকওয়ানি নিজে পাকিস্তান থেকে গাড়িতে করে ড্রাইভ করে লন্ডনে পৌঁছান ১২ ই নভেম্বর। সেখানে কিছুদিন অবস্থান করে খাকওয়ানি এবং নাইম আখন্দ এই দুইজনই নভেম্বরের ২৩ তারিখে ইংল্যান্ডের ডোভার চ্যানেল দিয়ে আবার বাই রোডে পাকিস্তানের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে। সে সময় বাংলাদেশের যুদ্ধ পরিস্থিতির কারনে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর পরিবার তাকে লন্ডনেই থেকে যেতে বলে সুতরাং খাকওয়ানি এবং নাইম এই দুইজন সাকাকে ইংল্যান্ডে রেখে পাকিস্তানের উদ্দেশ্যে রওয়ানা করে এবং শেষ পর্যন্ত পাকিস্তানে পৌঁছে ডিসেম্বরের ৬ তারিখে ১৯৭১।
ইসহাক খান খাকওয়ানি তার এফিডেভিটে বলেছে যে সালাউউদিন কাদের চৌধুরী, নাইম আখন্দ এবং খাকওয়ানি নিজে পাকিস্তান থেকে গাড়িতে করে ড্রাইভ করে লন্ডনে পৌঁছান ১২ ই নভেম্বর। সেখানে কিছুদিন অবস্থান করে খাকওয়ানি এবং নাইম আখন্দ এই দুইজনই নভেম্বরের ২৩ তারিখে ইংল্যান্ডের ডোভার চ্যানেল দিয়ে আবার বাই রোডে পাকিস্তানের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে। সে সময় বাংলাদেশের যুদ্ধ পরিস্থিতির কারনে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর পরিবার তাকে লন্ডনেই থেকে যেতে বলে সুতরাং খাকওয়ানি এবং নাইম এই দুইজন সাকাকে ইংল্যান্ডে রেখে পাকিস্তানের উদ্দেশ্যে রওয়ানা করে এবং শেষ পর্যন্ত পাকিস্তানে পৌঁছে ডিসেম্বরের ৬ তারিখে ১৯৭১।
কিন্তু এই একই গল্প আবার সাকার পক্ষে আসা সাক্ষী রিয়াজ আহমেদ নুনের ক্ষেত্রে অন্যরকম। রিয়াজের কথা অনুযায়ী খাকওয়ানী এবং সাকা দুইজনই লন্ডনে অবস্থান করতে থাকেন। খাকওয়ানী আর পাকিস্তানে ফেরত যায়নি।
আসুন দুইজনের এই দুই রকমের বক্তব্য আমরা একটি স্পস্ট করে দেখে নেই-
খাকওয়ানির বক্তব্যঃ (প্রত্যয়ন করেছে ২৬ শে জুন ২০১৩ তারিখে)
রিয়াজ আহমেদ নুনের বক্তব্যঃ (প্রত্যয়ন করেছে ৮-ই জুলাই ২০১৩ তারিখে)
এখন এই দুইজনের এই দুই রকম তথ্য আবার একই আইনজীবি সাইফুল্লাহ খান খালেদ নামে একজন আইনজীবির মাধ্যমে সত্যায়িত করা। দু'জনই আবার এফিডেভিটে তাদের বক্তব্য সত্য দাবী করেছে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে সত্য কোনটা? খাকওয়ানী বলছে সে সাকাকে রেখে পাকিস্তানে ফিরে গেছে আবার রিয়াজ বলছে খাকওয়ানী ইংল্যান্ডেই ছিলো, ফিরে যায়নি। সাকার পক্ষে বলতে এসে এই দুই রকম গল্প আমাকে আসলেই এক ধরনের নির্মল আনন্দ দিয়েছে। গল্প সাজানো, গল্পের গাঁথুনি এমন দূর্বল হলে মুশকিল। তাও আবার এমন একটা গুরুত্বপূর্ন মামলায়।
ইসহাক খান খাকওয়ানির এফিডেভিট টি পড়লে এমনিতেই যে কারও সন্দেহ হবে। ১৯৭১ সালের ঘটনা আজ থেকে প্রায় ৪৪ বছর আগের ঘটনা। এই ঘটনার ব্যাপারে খাকওয়ানি প্রতিটা দিন, তারিখ, গাড়িড় মডেল, রেজিস্ট্র্বশন নাম্বার, কবে কোথায় কয়টার সময় গিয়েছে যেভাবে এফিডেভিটে লিখেছে সেটি আসলেই সন্দেহের উদ্রেক করেছিলো আমার। সব চাইতে আশ্চর্য ব্যাপার হচ্ছে সেদিনের ট্রাভেলের সব ডকুমেন্ট খাকওয়ানি নাকি আবার জমা করে রেখেছিলো এই ৪৪ বছর ধরে। পাঠক বুঝতেই পারছেন সন্দেহ টা কেন হয়েছিলো।
এই লেখা পড়বার পর আর এই অসংগতি দেখবার পর আপনাদের হয়ত আর কিছু বলে দিতে হবে না। তবে এই রকম মামলায় যদি মিথ্যে গল্প এইভাবে বানাতেই হয় তবে সবাই একসাথে এক রুমে বসে গল্পটা বানালে এবং আরেকটূ চৌকশ আইনজীবি নিয়োগ করলে এইভাবে ধরা পড়তে হতো না বলে আমার বিশ্বাস।
No comments:
Post a Comment