Monday 31 August 2015

জাফর ইকবাল স্যারের বিরুদ্ধে মাসুদ রানাদের এত ক্ষোভ কেন?

যুক্তরাজ্য প্রবাসী মাসুদ রানা পর পর দুইটি নোটে জাফর ইকবাল স্যারকে তীব্র ভাবে অনৈতিক আক্রমণ করেছেন। ব্যক্তিগত গরল, ঘৃণা উদগীরনের এটাই বোধকরি এই ধরনের মানুষের জন্য সহজ সময়। পাহাড়ের সামনে দাঁড়াবার যার সামান্যতম যোগ্যতা নেই সে-ই খুব সম্ভবত ফাঁক খোঁজে পাহাড়ের পাদদেশে ফুটো করে পাহাড়কে জয় করবার। কিন্তু পাহাড়ের পাদদেশে ফুটো করে নিজেকে আড়াল করা যায়,খানিকটা লুকোনো যায়, পাহাড় জয় করতে পারা যায়না।

এর মধ্যে বলে রাখা ভালো যে মাসুদ রানা এক সময় বাসদ (বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল) সমর্থন করতেন বলেই বাজারে চালু রয়েছে। যদিও আমি নিশ্চিত নই। যদি হয়ে থাকে তবে সেক্ষেত্রে বলতেই হয় লুপ্ত ও বিস্মৃত দলটির এক সময়কার কর্মী আজ জাফর ইকবাল স্যারের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছেন। মেটাফোরিক বর্ণনে বলা যায় যে, সাবেক সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী নেতা বর্তমানে সাম্রাজ্যবাদী দেশের নাগরিক। বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাস ঘাটলে দেখা আরামে আয়েশে থেকে নাদুশ নুদুশ হবার পর সাম্রাজ্যবাদ সাধারণত আরামবাদ হয়ে ওঠে। 

এর আগেও মাসুদ রানা গোলাম আজমের গ্রেফতার নিয়ে তার অষন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন। নানাবিধ অপ্রাসঙ্গিক উদাহরন, গাল গল্প উপস্থাপন রসিয়ে রসিয়ে বর্ণনা করেছিলেন অযাচিত ভাবে। বার বার অযৌক্তিক সংশয় প্রকাশ করে বিচার ব্যবস্থাকে সাধারন মানুষের সামনে হেয় প্রতিপন্ন করেছিলেন। তার সে রকম একটা লেখার জবাব দেয়ার পরে যদিও তিনি আর এই বিষয়ে লেখার স্পর্ধা দেখান নি, কিন্তু তিনি তার পূর্বের লেখার জন্য ক্ষমাও চান নি। যাই হোক, সেসব কথা থাকুক। আমরা বরং মূল কথায় আসি।

শাহজালাল প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকেরা ছাত্রলীগের নানা কর্মীর মাধ্যমে আক্রমনের শিকার হয়েছেন এবং যথারীতি মাসুদ রানা আনন্দিত। ভদ্রলোকের লেখার মধ্যে সেই আনন্দ একেবারে জ্বল জ্বল করে জানান দিচ্ছে। একজন ব্যাক্তি বিপদে পড়লে যখন তার শত্রু আনন্দে উদ্বেলিত হন তখন এমন বীরপুরুষ মাসুদ রানাদের জন্য জন্য আসলে করুনা ছাড়া অন্য কিছুই থাকেনা। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে আসলেই কি জাফর ইকবাল স্যার বিপদে পড়েছেন নাকি মাসুদ সাহেব এটি নিজে নিজেই কল্পনা করে একের পর এক হাস্যকর নোট প্রসব করে চলেছেন?

উপরে যে বললাম হাস্যকর নোট, এটি বলবার কিছু কারন রয়েছে। মাসুদ সাহেব তার লেখায় যথারীতি “আজাইরা” “হাস্যকর” নানাবিধ কথা বার্তা বললেও আমার নজর কেড়েছে তার সেসব নোটের ভেতরকার আইনী উদাহরণ দেখে, আইনের ব্যখ্যা দেখে। বিষ্মিত হয়েছি মাসুদ সাহেব যেভাবে বাংলাদেশের পেনাল কোডের ব্যখ্যা করছেন। যতদূর জানি, মাসুদ সাহেব আইনজীবি নন। অবশ্য আইনিজীবি না হয়েও যে আইন জানা বা পড়া যাবে না তা নয় কিন্তু যখন এই ধরনের আইনী ব্যখ্যার নানাবিধ অপঃপ্রয়োগ দেখতে পাই তখন সেটিকে চ্যালেঞ্জ না করা পর্যন্ত আসলে নিজের ভেতরে শান্তি আসেনা। সে কারনেই লিখতে বসা। এই ছাড়া নিধিরাম সর্দারদের প্রতি আমার তেমন কোনো বিরাগ নেই।

মাসুদ সাহেবের দুইটি লেখা নিয়ে মূলত আমার এই নোট। দুইটি লেখার শিরোনাম যথাক্রমে-


১) জাফর ইকবালের গলায় দড়িঃ উচিত জেনেও না করার ভণ্ডামো [৩০ শে অগাস্ট প্রকাশিত]




মাসুদ সাহেবের প্রথম লেখাটি একজন মানুষকে স্পস্টত আত্নহত্যায় প্ররোচিত করে বলে প্রতীয়মান হয় এবং মানহানি হয়েছে এমনটাও সূচিত করে। এই লেখায় লেখক কিছু আইন ঝেড়েছেন বা ঝাড়ার চেষ্টা যা ব্যখ্যাগতভাবে ভুল মনে হয়েছে।

তার দ্বিতীয় লেখাটিও জাফর স্যারের প্রতি এক রকমের বিদ্বেষে ভরপুর। প্রথম লেখায় আইনী ইংগিত। অনেকেই সেটা নিয়ে হাসাহাসি করেছে দেখে ভদ্রলোক এইবার একেবারে পেনাল কোড সুদ্ধ উগরে দিয়েছেন। অনেকটা হুমায়ুন আহমেদের ওই লেখাটির মত-

এক শিশু তার বাবাকে ড্রয়িংরূমে গিয়ে বলছে, “বাবা হাইগা আইলাম”। এমন সময় শিশুটি কথা বলেছে যখন ভদ্রলোকের বাসায় অতিথি এসেছে। গেস্টের সামনে তো ভদ্রলোক বেশ বিব্রত হলেন। কাজের মেয়েকে বললেন শিশুটিকে নিয়ে যেতে। কিছুক্ষন পর শিশুটি আবারো এসে হাজির। এইবার শিশুটির হাতে এক খাবলা পায়খানা। হাসি হাসি মুখে শিশুটি তার বাবাকে সেই অতিথির সামনেই বলছে, “আব্বা হাগা নিয়া আইলাম”। বাবা অত্যন্ত অপ্রস্তুত হয়ে অতিথিকে ব্যখ্যা দিচ্ছেন এই বলে যে, “বুঝেছেন ভাই, বাচ্চাদের সাইকোলজি আসলেই মারাত্নক। প্রথমবার ও যখন এলো তখন তার কথা মনোযোগ দিয়ে শুনিনি, তাই দ্বিতীয়বার সে বস্তুটি নিয়ে এসে প্রমাণ করে দিয়েছে যে প্রথমবার সে কর্মটি আসলেই করেছে”

মাসুদ রানার অবস্থাও হয়েছে তেমন। প্রথমবার যে পুরীষ প্রসব করেছেন সেটিকে লোকজন খুব একটা পাত্তা দেয়নি। সেই ক্ষোভে এইবার পুরীষ সহ ভদ্রলোকের আগমন। সাইকোলজীটা বুঝতে হবে।

যা বলছিলাম। ২য় লেখাতে তিনি কাহিনী রচনা করেছেন এই বলে যে, জাফর স্যার কেন তাঁর স্ত্রীকে বাঁচান নি, কেন না বাঁচিয়ে আত্নহত্যা করতে চেয়েছেন, এটা দূর্বল ও কাপুরোষিত আচরন। দুনিয়ার আগডুম বাগডুম হাস্যকর কথা বার্তা দিয়ে শিশুতোষ লেখা। কিন্তু শিশুতোষ হলেও জবাব দিতেই হয়। একজন ধেড়ে লোক যখন শিশু সাজবার প্রাণান্তকর বাহাস সাজায় তখন তাকে সজাগ করবারই নিয়ম।

প্রথম লেখাতে তিনি যেও শিরোনাম ব্যবহার করেছেন এটি নিজেই যথেষ্ঠ আত্নহত্যায় প্ররোচনা দেবার জন্য। যেখানে তিনি বলছেন- “জাফর ইকবালের গলায় দড়িঃ উচিত জেনেও না করার ভণ্ডামো”। পাঠক লক্ষ্য করুন “উচিৎ জেনেও না করার ভন্ডামো” লাইনটি। আবার ঐ একই লেখায় তিনি বলছেন- 


“অধ্যাপক জফর ইকবালের কথা শুনে জাতির হৃদয় হায় হায় করে ওঠার আগেই তাঁর পূর্বঘোষিত ঔচিত্য পরিত্যাগ করে জানালেন, তিনি গলায় দড়ি না দিয়ে শুধু মনের মধ্যে তীব্র যন্ত্রণায় ভুগবেন। কি কুৎসিত ষ্ট্যাণ্ট! কি কুৎসিত শিক্ষা-সংস্কৃতি”

এই দুইটি অংশের যদি সরাসরি মানেও আমরা অনুবাদ করবার চেষ্টা করি কিংবা অন্তর্নিহিত ভাবটা বুঝবার চেষ্টা করি তাহলে বলতেই হয় যে মাসুদ চাইছেন যে জাফর ইকবাল স্যার যাতে আসলেই আত্নহত্যা টা করুক। যেমন নীচের এই বাক্যগুলো লক্ষ্য করুন-


(ক) উচিৎ জেনেও না করার ভন্ডামো- 

এতে করে মনে হতে পারে স্যার আত্নহত্যা করলে আর তিনি ভন্ড থাকবেন না। সুতরাং ভন্ড না হতে চাইলে আত্নহত্যা করে দেখান।

(খ) তাঁর পূর্বঘোষিত ঔচিত্য পরিত্যাগ করে জানালেন, তিনি গলায় দড়ি না দিয়ে শুধু মনের মধ্যে তীব্র যন্ত্রণায় ভুগবেন। কি কুৎসিত ষ্ট্যাণ্ট! কি কুৎসিত শিক্ষা-সংস্কৃতি- 


এই কথার মানে দাঁড়াচ্ছে যে স্যার যদি এখন আত্নহত্যা করতেন তাহলে এটি আর “কুৎসিত” স্ট্যান্ট হোতো না। স্যার আত্নহত্যা করলেই বরং সেটি হতে পারত বড় শোভন সংস্কৃতি। তার মানে মাসুদ সাহেব চাইছে এবং স্যারকে তার লেখার মাধ্যমে উষ্কে দিচ্ছে আত্নহত্যা করবার জন্য।


(গ) শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাম্প্রতিকতম ঘটনায় অধ্যাপক জাফর ইকবাল প্রথমে তাঁর “গলায় দড়ি দিয়ে মরা উচিত” বলে যেমন নিজেকে এক নির্বোধ আবেগ প্রকাশ করেছেন, অন্যদিকে পরক্ষণেই “এখনই গলায় দড়ি দিয়ে মরছি না” বলে তেমনি এক নীতিহীন ধূর্ততার পরিচয় দিয়েছেন। 

তার মানে দাঁড়াচ্ছে, মাসুদ চাইছে স্যার আত্নহত্যা করুক। স্যার আবেগের বশবর্তী হয়ে এই কথা বলবার পর এবং লেখক তা বুঝবার পরেও চাইছেন স্যার আত্নহত্যা করুক। আর আত্নহত্যা করলেই বরং স্যার নীতিহিন ধূর্ত হিসেবে পরিগণিত হবে না। তিনি সেক্ষেত্রে সঠিক হিসেবে বিবেচিত হবেন।

শুধু তা-ই নয়। এই লেখাতে স্যারকে ভন্ড, ভন্ডামী, নির্বোধ, নীতিহীন, ধূর্ত ইত্যাদি শব্দ দ্বারা উল্লেখ পূর্বক স্যারের মানহানিও করেছে এই মাসুদ রানা।

এবার যদি আমরা বাংলাদেশের পেনাল কোডের ৩০৬ ধারাতে লক্ষ্য করি তবে দেখব সেখানে লেখা রয়েছে যে আত্নহত্যায় সহায়তা কিংবা প্ররোচনা দানের কথা। এ ধারায় বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি আত্মহত্যা করলে অনুরূপ আত্মহত্যা অনুষ্ঠানে সহায়তাকারী ব্যক্তির ১০ বছর পর্যন্ত কারাদন্ড হতে পারে।


306. If any person commits suicide, whoever abets the commission of such suicide, shall be punished with imprisonment of either description for a term which may extend to ten years, and shall also be liable to fine.


যেহেতু আত্নহত্যার ঘটনা এখনো সংগঠিত হয়নি কিন্তু যদি হয়, তাহলে এই মাসুদকে কিন্তু বাংলাদেশের আইনে গ্রেফতার করা সম্ভব। মাসুদ রানার এই লেখার প্রেক্ষিতে একটা জিডি যদি এখন বাংলাদেশে করা যায় তবে সেটির প্রেক্ষিতে কিন্তু মাসুদের বিরুদ্ধে একটা মামলাও হতে পারে। শুধু পেনাল কোড কেন, তথ্য প্রযুক্তি আইন-২০০৬ এর ৫৭(১) ধারাতেও এই লোকের বিরুদ্ধে মামলা সম্ভব।

৫৭(১) ধারাতে যে মানহানির কথা বলা রয়েছে। সেটি ছাড়াও বাংলাদেশের প্রচলিত পেনাল কোডের ৪৯৯ ধারার মাধ্যমেও মাসুদ রানার বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করা সম্ভব।এই ধারায় বলা হচ্ছে- 

499. Whoever by words either spoken or intended to be read, or by signs or by visible representations, makes or published any imputation concerning any person intending to harm, or knowing or having reason to believe that such imputation will harm, the reputation or such person, is said, except in the cases hereinafter excepted, to defame that person.

মাসুদের দ্বিতীয় লেখাটির প্রথম লেখার চাইতেও সরেশ। এই লেখায় সেই শিশুর মত এক খাবলা পুরীষ সহ সে নিয়ে এসেছে। জাফর ইকবাল স্যারকে পেনাল কোডের ৩০৯ নাম্বার ধারা শেখাচ্ছে। যেখানে সে বলছে- 


শুধু তাই নয়, দেশের আইন সম্পর্কে সম্ভবতঃ অজ্ঞ এই অধ্যাপক জাফর ইকবাল প্রকাশ্যে আত্মহত্যা করার ইচ্ছা প্রকাশ করে বস্তুতঃ বাংলাদেশ দণ্ডবিধির ৩০৯ ধারায় এক বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড কিংবা জরিমানা কিংবা উভয় প্রকার দণ্ডযোগ্য অপরাধ প্রবণতা প্রদর্শন করেছেন। রাষ্ট্র চাইলে প্রিএ্যাম্পটিভ পদক্ষেপ হিসেবে তাঁকে গ্রেফতার করতে পারে, কারণ তিনি অস্বাভাবিক ও অপরাধপ্রবণ। 


প্রথমেই জেনে নেই যে ৩০৯ নাম্বার ধারাতে কি রয়েছে-

309. Whoever attempts to commit suicide and does any act towards the commission of such offence shall be punished with simple imprisonment for a term which may extend to one year, or with fine, or with both.

প্রথমেই দেখা যাচ্ছে যে আগে সুইসাইডের এটেম্পট হতে হবে। আইনের এই রিকোয়ারমেন্ট কি ফুলফিল্ড হয়েছে জাফর স্যারের ক্ষেত্রে? স্যার কি সুই সাইডের এটেম্পট নিয়েছেন?

কিন্তু আমাদের ফেইসবুক “নৌট” বিশারদ মাসুদ রানা কি বলছেন? তিনি অলরেডী এই ধারাতে দোষী সাব্যাস্ত করে দিয়েছেন জাফর স্যারকে। ঘটনা ঘটবার আগে শাস্তি। এই বিষয়ে এই বিজ্ঞ “নৌট”বিদ আবার বলছেন প্রি-এম্পটিভ পদক্ষেপ। তা প্রি এম্পটিভ পদক্ষেপের কথা আইনের কোথায় লেখা আছে? পেনাল কোডের কোন ধারায়? এটি কি নৌট বিশারদের কল্পনাপ্রসূত আইন?

বরং এই “নৌট” বিশারদকে আত্নহত্যায় প্ররোচনা দেবার গর্হিত অপরাধে আইনের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো উচিৎ। একটা সামান্য আবেগের ভাষ্য বুঝেও যে লোক না বুঝবার ভান করে এবং পূর্ব ক্ষোভের বা পূর্বে কিছু করতে না পারবার আক্ষেপ সুযোগ পেয়ে ফায়দা লুটবার চেষ্টা করে তাকে আসলে কি বলা যায়?সুযোগ সন্ধানী?চালাক? চতুর নাকি কুটিল?

জাফর স্যার নাকি ইয়াসমিন ম্যাডামকে রক্ষা করতে পারেন নি গুন্ডাদের আক্রমন থেকে। তাও আবার তিনি সেগুলো নাকি শুনেছেন!! শুনে সেসব নিয়ে দক্ষিনে ভারতীয় সিনেমার মত কাহিনী রচনা করেছেন। স্ত্রীকে রক্ষা না করে জাফর স্যার নাকি আত্নহত্যার কথা বলেছেন। কথা কোথায় থেকে কোথায় ঘুরিয়ে নিয়ে চলে গেলো। ভাবা যায়!! এত কুটিল, এত ভয়াবহ প্যাঁচ কেন এদের ভেতর? এত জ্বালা কেন এদের? সারাজীবন সাম্রাজ্যবাদ আর মার্কিনী-ইঙ্গ শক্তির বিরুদ্ধচারন করে তাদের কোলে হাওয়া খাবার মত ট্র্যাজেডিতেই কি এত হতাশ? কিছু না করতে পারার মিছে আস্ফালন-ই কি এসব নৌট জাতীয় পুরীষ রচনা?কি জানি...

জাফর ইকবাল স্যার একজন শিক্ষক। একজন শিক্ষক একজন ছাত্র বা ছাত্রীকে সঠিক মানুষ হিসেবে, সঠিক শিক্ষাদানের মাধ্যমে গড়ে তুলবেন এটাই একজন শিক্ষকের পাথেয় থাকে। একজন ছাত্র বা ছাত্রী যখন জীবন সংগ্রামে পরাজিত হন, ব্যর্থ হন তখন সেটি একই সাথে সে শিক্ষকের পরাজয়। আবার একজন শিক্ষার্থী যখন শিক্ষকদের সাথে দূর্ব্যবহার করেন তখন সেটি সে শিক্ষকের জন্যও বড় বেদনার এবং কষ্টের। যেমন আব্দুল্লাহ আবু সায়ীদ স্যার তাঁর নিষ্ফলা মাঠের কৃষক বইতে একটি বেদনার ঘটনা উল্লেখ পূর্বক বলেছেন-

"ঘটনাটা আমাকে খুবই আহত করলো। আমি কুঁকড়ে, ছোট হয়ে নিজের ভেতর ক্রমাগতভাবে ঢুকে যেতে লাগলাম। আমি লক্ষ করলাম, আমি মাথা উঁচু করে অন্যদের চোখের দিকে তাকাতে পর্যন্ত পারছিনা। অসম্মানে, অপমানে, আশাভঙ্গে সহজ হবার শক্তি পর্যন্ত হারিয়ে ফেলেছি"

একজন শিক্ষকের এটি বেদনার প্রকাশ। জাফর স্যার দুঃখ আর বেদনা নিয়েই বলেছিলেন তাঁর এখন দড়ি নিয়ে আত্নহত্যা করা উচিৎ। সেটির ব্যখ্যাও তিনি দিয়েছেন। তাঁর কোনো ছাত্র তাঁরই সামনে শিক্ষকদের পিটিয়ে চলে যায়, এর থেকে বেদনার আর কি হতে পারে? এটি যে একটি শোকাতুর লিরিক, এটি যে শোকগ্রস্থ একজন পিতাসম শিক্ষকের দুঃখ এটি বুঝতে পেরেও কিছু লোক না বুঝবার ভান করে। এরা ফেসবুকে মাসুদ রানাদের মত নোট লেখে। এদের পূর্ব ক্ষোভের উদগীরন ঘটায় নোংরাতম উপায়ে।

মাসুদের লেখাটি সেসব নোংরা ক্ষোভের সর্বোৎকৃষ্ঠ প্রকাশ।

No comments:

Post a Comment