Wednesday 21 February 2018

পার্বত্য চট্রগ্রাম ও সাম্প্রতিক ভাবনা

গত প্রায় দু'তিনদিন ধরে আমার ভাবনার ও পড়বার বিষয়ে খুব তীব্র আকার নিয়ে যোগ হয়েছে পার্বত্য চট্টগ্রাম। পার্বত্য চট্টগ্রাম ইস্যুতে দিনের পর দিন অভিযোগের তীর ক্রমাগত উঠেছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর দিকে।
পাহাড়ে পান থেকে চুন খসলে সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে যে রটনা, যে কুৎসা কিংবা যে সংবাদ্গুলো অন্তত পক্ষে আমার ফেসবুকের টাইমলাইনে ভেসে আসে, তা মোটেই সুখকর নয়।
আমার ফেসবুকে যেসব পলিটিকাল কর্মী ও মানবাধিকার কর্মীরা রয়েছেন এদের বেশীরভাগের বক্তব্য আমি পার্বত্য চট্টগ্রাম ইস্যুতে নির্মোহ মনে করিনা। তাই তাদের বক্তব্য একেবাড়ে চূড়ান্ত বলে গ্রহন করতে পারিনি। এই না করবার পেছনে আমার নিজস্ব একটি অবস্থান ও যুক্তি রয়েছে। আমি আসছি এই ব্যাপারে।
গত প্রায় বেশ কিছুদিন ধরে পার্বত্য চট্টগ্রাম দু'জন নারীকে ধর্ষন বিষয়ে আলোচনা তুঙ্গে। যথারীতি চোখ বন্ধ করে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে দোষ দিয়ে দুই তিনবার মিডিয়া ট্রায়াল হয়ে গেছে। স্বাভাবিক ভাবেই এই বিষয় আমার আগ্রহের চূড়ান্ত জন্ম দিয়েছে।

এই দুই নারীকে কে ধর্ষন করেছে সে বিষয়ে যাবার আগে আমি প্রথমেই আমার মনের গোপন কষ্টের কথা বলে যাই। সংবাদটি শুনে আমি প্রচন্ড ব্যাথিত হয়েছি, কষ্ট পেয়েছি এবং ধর্ষকদের ধরে বিচারের দাবী করছি।
লক্ষ্য করে দেখবেন, আমি আমার লেখায় উল্লেখ করেছি দু'জন নারীকে ধর্ষন করা হয়েছে। অনেকেই হয়ত মন্তব্যের ঘরে আমাকে স্বরণ করিয়ে দেবেন, নারী নয়, লিখুন "মারমা" নারী। অর্থ্যাৎ একটি সুনির্দিষ্ট জাতি গোষ্ঠীর নাম উল্লেখপূর্বক ধর্ষনের কথাটি লিখবার একটি তাগাদা আসতে পারে বলে আমি অনুমান করি।
আমি যে এই অনুমান করি এটি বলা চলে আমার এই বিষয়ক অভিজ্ঞতার ফলাফল। বাংলাদেশে যখন একটি মুসলমান মেয়ে ধর্ষিত হয়, তখন আমি কোথাও লিখতে দেখিনা লেখা হচ্ছে মুসলমান মেয়ে অমুক ধর্ষিত। কিন্তু শুধু মুসলমান ধর্মীয় চৌহদ্দীর মধ্য থেকে বের হয়ে অন্যান্য ধর্ম, অন্যান্য জাতিগোষ্ঠীর কেউ ধর্ষিত হলে, নির্যাতিত হলে আমি সব সময় লক্ষ্য করি সেই ধর্ম, সেই জাতি এই ব্যাপারগুলোকে খুব আলোকিত করে সংবাদ প্রকাশিত হয়।
আর এই পার্টিকুলার যায়গাতে এসে আমি প্রবল আপত্তি তুলতে চাই। আসলে জাতি, ধর্ম, গোত্র এগুলোকে হাইলাইট করে কিংবা ব্যবহার করে লেখার ভেতরেও এক ধরনের চালাকি রয়েছে। রয়েছে সুনির্দিষ্ট বদমায়েশি বুদ্ধির প্রাচুর্য্যতা।
সাম্প্রতিক সময়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে যে দু'টি ধর্ষনের কথা বলেছি সেটির সূত্র ধরে আমি কথা বলছিলাম Afrin Zaman Lina আপার সাথে। লীনা আপা দীর্ঘদিন পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে কাজ করেছেন, করছেন। সুতরাং একজন অভিজ্ঞ ব্যক্তি হিসেবে তাঁর কাছে জানবার ছিলো এই ঘটনায় মেজর তানভীর বলে যে সেনা সদস্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ এসেছে, সেই সম্পর্কে তিনি কতদূর জানেন কিংবা আদৌ জানেন কিনা।
আমার এই প্রশ্নের জবাবে তিনি যা বলেছেন ও জানিয়েছেন সেটি বিষ্ময়ের।
তিনি জানিয়েছেন এই ঘটনার সম্পর্কে যে সময়কালের কথা বলে চারিদিকে প্রচারিত হচ্ছে, সেটি মিথ্যে। খুব অথোরটি নিয়ে তিনি বললেন, মেজর তানভীর ওই দুই নারীকে ধর্ষন তো দূরের কথা, আশে পাশেও ছিলেন না।
এই যে চট করে একজন সেনাবাহিনীর মেজরকে নিয়ে এমন ধর্ষনের কথা কিংবা খুনের কথা কিংবা অপরাধের কথা আমাদের বলতে হয়, সন্দেহের কথা বলতে হয়, এগুলোতে আমার আসলে খুব লাগে। আমরা আমাদের দেশের রাজনৈতিক বিভিন্ন পর্বে সেনাবাহিনীর নানাবিধ পদক্ষেপেরে কিংবা কর্মের ব্যাপারে সমালোচনা করেছি তীব্র ভাবেই। কিন্তু দুটি মেয়েকে নিয়ে এসে ধর্ষন করবে এটি বলতে গিয়ে আমার প্রচন্ড বাঁধে। আমার আসলেই বাঁধে।
কোন প্রমাণের দরকার নেই, কোনো তথ্যের দরকার নেই, কোনো যথার্থতার দরকার নেই। কেবল পাহাড়ে পান থেকে চুন খসবে আর বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সদস্যদের দিকে আঙ্গুল উঠিয়ে বলে দিলেই হয়ে গেলো।
একটি গণতান্ত্রিক দেশে তথাকথিত কোথাকার কোন এক রাণী তকমাধারী ইয়েন ইয়েন নামের সেই ভদ্রমহিলা মাইকের সামনে দাঁড়িয়ে সেনাবাহিনীর কথা ইঙ্গিত করে যা ইচ্ছে তাই বলে দিলেন, ব্যাস শেয়ালের হুক্কা হুয়ার মত শুরু হয়ে গেলো বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর নামে যা ইচ্ছে তা-ই বলা।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনী দেশকে দ্বিখন্ডিত করবার বিরুদ্ধে দাঁড়াবে, সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে দাঁড়াবে, এটাই তাঁদের দায়িত্ব। কিন্তু আপনার মাদক চোরাচালানীদের বাঁধা দিলেই কিংবা অস্ত্র সরবরাহ বন্ধ হলেই সেনাবাহিনী ধর্ষক বলে এই প্রোপাগান্ডা বন্ধ হতে হবে।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনী নিয়ে আমার অসংখ্য বক্তব্য রয়েছে, আলোচনা রয়েছে, সমালোচনা রয়েছে। এসব সব কিছুই আসলে তাত্বিক, স্ট্র্যাটেজিকাল বিষয়াদি নিয়ে। কিন্তু আমি ভাবতেও পারিনা কোনো প্রমাণ ছাড়া কিংবা তথ্য ছাড়া ধুম করে এইভাবে বাংলাদেশের সেনাবাহিনীর সম্পর্কে ধর্ষনের অভিযোগ উঠিয়ে ফেলা যায়।
বলা হচ্ছে যুগ যুগ ধরে পাহাড়ে অত্যাচার করছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। এই কথাগুলো যারা বলছেন তাদের ভেতর অসংখ্য মানবতাবাদী রয়েছেন, মানবাধিকার কর্মী, এন জি ও, গবেষক, পলিটিকাল কর্মী রয়েছেন।
কিন্তু আজ পর্যন্ত আমি এই ব্যাক্তিদের মুখে কোনোদিন শুনতে পাইনি পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে ইউ পিডি এফ, শান্তিবাহিনী কিংবা এই রকম যেসব বিচ্ছিন্ন সন্ত্রাসী দল রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে একটি উচ্চারণ। এই দলের সন্ত্রাসীরা খোদ পাহাড়ের বিভিন্ন যুবকদের জোর করে বাধ্য করে তাদের দলে ভীড়বার জন্য, বাংলাদেশ সরকারের বিরুদ্ধে কাজ করবার জন্য। এরা নিজেদের মত করে অর্থ মূদ্রন করেছে, এরা নিজেদের আলাদা সেনাবাহিনী বানিয়েছে, এরা ঐ এলাকাতে বসবাসরত বাঙালী অধ্যুষিত এলাকাতে গিয়ে ক্রমাগতভাবে তাদের হত্যা করছে, পেটাচ্ছে, কেউ আওয়ামীলীগে যোগ দিতে চাইলে তাকে হত্যা করে ফেলে যাচ্ছে, কেউ বি এন পিতে যোগ দিতে চাইলে তাকে মেরে কুটি কুটি করছে।
এইসব সন্ত্রাসীদের হাতে অসংখ্য সেনাবাহিনীর অফিসার খুন হয়েছেন, নির্যাতিত হয়েছেন, পঙ্গু হয়েছেন। সেখানে অসংখ্য বাঙালীদের হত্যা করা হয় এবং এইসব সন্ত্রাসী বিচ্ছিন্নতাবাদীরা নিরবিচ্ছন্নভাবে মুক্তিযুদ্ধের কিছুকাল পর থেকে তা জারি রেখেছে। আমি এসবের শত শত ফিরিস্তি, প্রমাণ দিতে পারব।
আজ পর্যন্ত আপনারা কখনো কি শুনেছেন এইসব বিষয় নিয়ে একটি কথা হতে। আমাদের সমতলের মানবতার পতাকা তোলা সেইসব অশ্বরোহীরা কোথায় থাকে যখন একজন চাকমা মেয়ে একজন বাঙালী ছেলেকে বিয়ে করবার জন্য হত্যার হুমকি পায় কিংবা ধর্ষনের হুমকি পায় শান্তিবাহীনির সন্ত্রাসীদের কাছ থেকে?
কোথায় থাকেন সেসব মানবতাবাদীরা যখন আমাদের দেশের, এই রক্তের মানুষদের, এই ভুখন্ডের মানুষদের সেটেলার বলে আখ্যায়িত করে দূরদ্বীপবাসী করে রাখা হয়? গণতন্ত্র নিয়ে হা পিত্যেস করা রাজনৈতিক কর্মী থেকে মানবাধিকার কর্মী, তারাই বা কই থাকেন যখন পাহাড়ে চলে রাজার শাসন? আপনারা না সমতলে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার জন্য আর্তনাক করেন? চিৎকার করেন!!
আমার দেশ, আমার মাটি অথচ আমার নাম সেটেলার? এই দুঃসাহস হয় কি করে? কিভাবে এটি সহ্য করব?
জুম্মল্যান্ড নাম দিয়ে সেটির পতাকা করে ফেলা হয়েছে পার্বত্য চট্রগ্রামে, আলাদা মুদ্রা ব্যবস্থা রয়েছে, আলাদা বিচার ব্যবস্থা করেছে। দেদারসে পপি চাষ করছে সন্ত্রাসী দলগুলো, পাচার করছে মাদক, পাচার করছে অর্থ, হাত মেলাচ্ছে অন্যান্য সন্ত্রাসীদের সাথে। এদেরকে দমন করবার নাম-ই কি বাংলাদেশের সেনাবাহিনীর ধর্ষক হয়ে ওঠা?
কিসের রাজা দেবাশীষ রায়? হু ইজ হি? একটা পাড় রাজাকার, পাকিস্তানের মহা দালাল ত্রিদিব রায়ের ছেলে দেবাশীষ। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত ত্রিদিব বাংলাদেশের বিরুদ্ধে কাজ করে গেছে। এই আমরাই এক সময় ত্রিদিব রাজাকারের লাশ এই স্বাধীন বাংলাদেশে আনতে দেইনি সম্মিলিত ভাবে। আমরা আন্দলোন করেছি, আমরা লিখেছি, আমরা বলেছি।
আর এই গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে সে কিসের রাজা? কোথাকার রাজা সে? এলিট সেজে পাহাড়ের প্রান্তিক সহজ সরল মানুষের রক্ত চোষা এই রাজাকারের ছেলের কথা আর তার স্ত্রীর কথা আমাকে শুনতে হবে এখন? আমার বাপ চাচারা কি এই রাজতন্ত্রের জন্য যুদ্ধ করেছে নাকি? আমার বাপ চাচারা কি এই কারনে যুদ্ধ করেছে যে একটা রাজাকারের সন্তান এলিটের জোব্বা পড়ে আর পাগড়ী পড়ে গরীব চাষীদের কাছ থেকে খাজনা নেবে?
আপনারা শুনলে অবাক হবেন যে জুম খেতের এক একর জমির মধ্য থেকে খাজনা হচ্ছে ১ টাকা ৬২ পয়সা। সেই টাকার মধ্যে থেকে ৩৭ পয়সা নেন কারবারীরা, ৪২ পয়সা নেন রাজা আর বাকীটা বাংলাদেশ সরকার। আমার ভাবতেই অবাক লাগে একটা গণতান্ত্রিক দেশে প্যারালালি আরেকটা সরকার চলছে দেশের আরেক কোনায় যেখানে এই রাজাকারের পরিবার হচ্ছে সর্বেসর্বা।
কিসের জন্য দেবাশীষের পরিবার ৪২ পয়সা পাবে একর প্রতি ফসলের? এই প্রান্তিক চাষীরা দিনের পর দিন পরিশ্রম করে ফসল ফলান আর রাজাগিরি করে আর সোনালী পাগরী পড়ে এই গনতান্ত্রিক দেশে খাজনা নেবে রাজা? প্রশ্ন হচ্ছে, কেন নেবে? কোন যুক্তিতে নেবে এরা? এটা কি রাজা-গজার দেশ নাকি? রাজার পাইক পেয়াদারা আবার সাধারণ জনতাকে ডাকে প্রজা। এসব জানতে পেরে বিষ্মিত হতে হয়।
হুমায়ুন আজাদ স্যার তাঁর লিখিত গ্রন্থ "পার্বত্য চট্টগ্রাম, সবুজ পাহাড়ের ভেতর দিয়ে প্রবাহিত হিংসার ঝরনাধারা"-তে পরিষ্কারভাবে লিখেছেন এখানকার সন্ত্রাসীবাহিনীগুলো কিভাবে চাঁদা আদায় করে হুমকি দিয়ে। তারা ঘর প্রতি চাঁদা বেঁধে দেয়। জন প্রতি বেঁধে দেয়। আর চাঁদা না দিলে পুরষ্কার হচ্ছে মৃত্যু।
বাংলাদেশের সংবিধান কি দুই রকমের? বাংলাদেশের আইন কানুন কি দুই রকমের? এই ছাপ্পান্ন হাজার বর্গমাইলের জমিতে আমার অধিকার আছে প্রতিটি ইঞ্চিতে। এই দেশের প্রতিটি ইঞ্চিতে আমার বাবার, আমার ভাইয়ের, আমার স্বজনদের লাশ পোতা রয়েছে। তাঁদের রক্ত আছে এই ভূমিতে।
৩০ লক্ষ শহীদ এই কারনে প্রাণ দেয়নি যে এই বাংলাদেশে দুইটি রাষ্ট্র হবে। এটা এক দেশ কিন্তু নানাবিধ সম্প্রদায়ের মানুষ একসাথে থাকবেন। এই দেশে কোনো রাজা থাকবে না, প্রজা থাকবেনা। এই দেশে শুধু থাকবে মানুষ। এই দেশ পাহাড়ে এলিট চৌহদ্দী তৈরী করবার জন্য জন্ম নেয়নি। দেবাশীষ আর তার মত এলিটরা যুগের পর যুগ এই পাহাড়কে বিভাজন করে রেখেছে মূল ভূখন্ড থেকে। এদের এইসব এলিটিজমের চর্চায় বাঁধা হয়ে দাঁড়ায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, আর সে কারনেই তাদের যত রাগ, ক্ষোভ আর প্রোপাগান্ডা তাদের দিকে ধেয়ে বেড়ায়।
আমি পাহাড় নিয়ে যতবার পাঠ করেছি ততবার কাতর হয়েছি এই অঞ্চলের নিরীহ মানুষগুলোর জন্য। বাঙালী, চাকমা, মারমা, মগ, মুরং সহ নানা জাতিগোষ্ঠীর নিরীহ সাধারণ মানুষগুলো আজকে সবচাইতে নিগৃহীত। সবচাইতে পশ্চাৎপদ। আর এসবের এক্টাই কারন সেটি হচ্ছে পাহাড়ে এলিট শ্রেণীর আধিপত্য। এই অংশটি-ই এই অঞ্চলে টিকিয়ে রেখেছে সংঘাত, এরাই টিকিয়ে রেখেছে বিচ্ছিন্নতাবাদের দুষ্ট স্বপ্ন আর এরাই সার্বভৌমত্বের নাম করে গরীবের একর প্রতি ৪২ পয়সা পকেটে পোরে।
পাহাড়ী প্রান্তিক সাধারণ জনতা আমার ভাই। আমি সমতলের নিঝুম মজুমদার আর পাহাড়ের প্রান্তিক চাষী সজীব দেওয়ান, আমরা ভাই ভাই। আমরা হাত ধরে এগোব অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের জন্য, আমরা সামনে এগোবো এই দেশকে গড়বার জন্য।
আমরা লাথি দিয়ে ভাঙব এলিট চক্রের ভূত। আমরা লাথি দিয়ে ভাঙব এই তথাকথিত রাজার গদি।

No comments:

Post a Comment