(খ) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালে বিচার ও সেখানে মুসলিম আইডেনটিটির অপঃ ব্যবহার
এই লেখাটির ১ম পর্ব পড়তে হলে ক্লিক করুন
এখানে
এই লেখাটির ২য় পর্ব পড়তে হলে ক্লিক করুন
এখানে
বাংলাদেশে ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময়ে সংঘটিত বর্বর গণহত্যার সাথে বাংলাদেশের যে সকল দালাল তথা রাজাকার,আল-বদর, আল-শামস এবং ইন্ডিভিজুয়াল যেসব ব্যাক্তি এই গণহত্যা এবং সেসময়ে এই যুদ্ধকালীন সময়ে বিভিন্ন অপরাধের সাথে যুক্ত ছিলো, তাদের বিচার বাংলাদেশ সরকার একটি নিরপেক্ষ ট্রাইবুনাল এর মাধ্যমে অত্যন্ত সুচারু ও সম্পূর্ণভাবে রাজনৈতিক প্রভাব ও প্রতিপত্তি মুক্ত রেখে শুরু করেছে। ২০১০ সালের ২৫ শে মার্চ একটি গেজেট নোটিফিকেশানের মাধ্যমে গঠিত হয়েছে ট্রাইবুনাল এবং ২৬ শে জুলাই ২০১০ সালে শুরু ট্রাইবুনালের আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম। এই ট্রাইবুনাল যেই আইনে পরিচালিত হচ্ছে, সেই আইনের নাম হচ্ছে- আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইবুনাল) আইন-১৯৭৩। গত ২৫ শে মার্চ ২০১৬ সালে এই ট্রাইবুনালের বয়স গিয়ে দাঁড়ালো ৬ বছর।
এই বিচারটি শুরু হয়েছে ২০০৮ সালে আওয়ামীলীগ সরকারের নির্বাচনপূর্ব প্রতিশ্রুতি হিসেবেই। কিন্তু সত্যটা হচ্ছে এই রকমের যে একটি বিচার করবার জন্য একটি সরকারকে যেমন নিবেদিত প্রাণ, দক্ষ হতে হয় তার শতকরা ত্রিশ ভাগও এই সরকার দেখাতে পারেনি।
এই আইন সম্পর্কে কিংবা আন্তর্জাতিক অপরাধ আইনের সম্পর্কে (সাবেক) আইনপ্রতিমন্ত্রী কামরুল ইসলাম, এক সময়ের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী মইনুদ্দিন খান আলমগীর, সুরঞ্জিত সেন গুপ্ত, মতিয়া চৌধুরীকে নানান যায়গায় যেসব কথা বার্তা, বিবৃতি দিতে দেখেছি যেগুলো একটা পর্যায়ে বিচারিক ক্ষেত্রে জটিলতা তৈরী করেছে। এমনকি সুরঞ্জিত সেন গুপ্ত ও মতিয়া চৌধুরী ট্রাইবুনাল বিষয়ক নানান বক্তব্যের জন্য ট্রাইবুনালের কাছে ক্ষমাও প্রার্থনা করেছেন। সাম্প্রতিক সময়ে খাদ্য প্রতিমন্ত্রী ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী মোজাম্মেল হোসেন আপীলেট ডিভিশানের বিচারপতিদের নিয়ে যেই মন্তব্য করেছেন এই বিচার বিষয়ক কিছু ইস্যুওকে কেন্দ্র করে সেটির জন্য দু’জনেরই ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা হয়েছে এবং তাঁদের মন্ত্রীত্ব এখন প্রায় যায় যায় অবস্থায় রয়েছে।
উপরে যে বলেছি দক্ষতার কথা কিংবা নিবেদিত প্রাণের কথা সেটি বলছি এই ট্রাইবুনালকে নিয়ে স্বাধীনতা বিরোধী চক্রের ব্যাপক আকারে মিথ্যাচার ও তার প্রেক্ষিতে সেটি ঠেকাতে সরকারের ব্যার্থতার পুরো ব্যাপারটি মাথায় রেখেই। মুক্তিযুদ্ধের পর যেখানে জেনারেল জিয়াউর রহমান, জেনারেল এরশাদ কিংবা বেগম খালেদা জিয়ার আমলে মুক্তিযুদ্ধকালীন দালাল ও রাজাকার রা পুনর্বাসিত হয়েছে ও সেইসাথে মন্ত্রীত্ব পেয়েছে, জাতীয় সংসদে গিয়েছে সেখানে এটা আওয়ামীলীগ সরকারের সহজেই অনুমান করা উচিৎ ছিলো যে মুক্তিযুদ্ধের প্রায় ৩৯ বছর পর এই স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি যথেষ্ঠ সংঘবদ্ধ হয়েছে, শক্তিশালী হয়েছে অর্থনৈতিক ও সামাজিক ভাবে প্রকট আকার ধারন করেছে।